এবার পৃথিবীর বাইরে পাঠানো হচ্ছে শিল্পকর্ম। চাঁদে পাঠানো হচ্ছে দুবাইভিত্তিক শিল্পী সাচা জাফরির একটি চিত্রকর্ম। মহাকাশযানে চড়ে আগামী মার্চে চাঁদের এক নিভৃত কোণে অবতরণের কথা রয়েছে সেটির।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কেপ ক্যানাভেরাল থেকে ১৯৭৭ সালে যাত্রা শুরু করে মহাকাশযান ভয়েজার ১ ও ভয়েজার ২। আমাদের সৌরজগৎ ও এর বাইরের মহাজগৎ অনুসন্ধান করাই ছিল সেই অভিযানের উদ্দেশ্য। ভয়েজার যানে একটি তামার ফোনোগ্রাফ ডিস্কে কিছু ছবি, প্রকৃতির শব্দ ও সংগীত রেকর্ড করে পাঠানো হয়েছিল।
ভয়েজারে পৃথিবীর ছবি ও শব্দ পাঠানোর উদ্দেশ্য ছিল যাত্রাপথে ভিনগ্রহের কোনো বুদ্ধিমান প্রাণীর মুখোমুখি হলে তারা যেন পৃথিবীর প্রাণীদের সম্পর্কে ধারণা পায়। এগুলো ছিল মহাশূন্যে পাঠানো প্রথম ছবি। কোটি কোটি মাইল ভ্রমণের পর ভয়েজার ১ ও ভয়েজার ২ বর্তমানে আন্তর্নাক্ষত্রিক মহাশূন্যে অবস্থান করছে। এমন প্রেক্ষাপটে শিল্পীরা আবার পৃথিবীর বাইরে শিল্পকর্ম পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে দুবাইভিত্তিক শিল্পী সাচা জাফরির একটি চিত্রকর্ম মহাকাশযানে চড়ে আগামী মার্চে চাঁদের এক নিভৃত কোণে অবতরণের কথা রয়েছে।
‘উই রাইজ টুগেদার—বাই দ্য লাইট অব দ্য মুন’ শীর্ষক চিত্রকর্মটি ইউনাইটেড লঞ্চ অ্যালায়েন্সের রকেটে চড়ে মহাশূন্যে যাবে। মার্চের প্রথম সপ্তাহে ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরালের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে এটি যাত্রা করবে। খোদাই করা এই চিত্রকর্মে একজন পুরুষ ও একজন নারীর আদলকে ঘিরে রেখেছে ৮৮টি হৃদয়। শিল্পী জাফরি বলেন, পরস্পরকে জড়িয়ে থাকা দুটি আদলের পুনঃসংযোগ ঘটছে। আর তাদের চারপাশে রয়েছে উদ্ভিদ ও প্রাণিকুল। তিনি বলেন, ভালোবাসা ও সহমর্মিতার মাধ্যমে মানুষের মিলনকেই ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন তিনি।
জাফরি বলেন, মহাকাশযানটি চাঁদের আগ্নেয়গিরি লাকুস মরটিসে (মৃত্যু হ্রদ) চিত্রকর্মটি স্থাপন করবে, যা অনন্তকালের জন্য সেখানে থাকবে।
চন্দ্রপৃষ্ঠের প্রতিকূল পরিবেশে চিত্রকর্মটি অক্ষত রাখতে দুই বছর ধরে সোনার সঙ্গে নানা কিছু মিশিয়ে একটি বিশেষ ধাতু বানানো হয়েছিল। তবে চিত্রকর্মটি শুধু ভিনগ্রহের কোনো প্রাণীর জন্য আঁকা হয়নি। পৃথিবীতেও এর ডিজিটালভিত্তিক অনন্য প্রতিলিপি বিক্রি করা হবে। তা থেকে পাওয়া অর্থ ব্যয় করা হবে দাতব্য কাজে।