বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’য় পরিণত হয়েছে। এটি সুপার সাইক্লোনে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। চূড়ান্তভাবে রোববার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে এই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে কক্সবাজার ও মিয়ানমারের মাঝামাঝি উপকুল এলাকায়।
এটি কতটা বিপজ্জনক হতে পারে তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। মোকার গতিপ্রকৃতি প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করছেন আবহাওয়াবিদরা। এ অবস্থায় বেশ কিছুদিন ধরে এ ঘূর্ণিঝড়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। জেনে নেওয়া যাক, ঘূর্ণিঝড়টির নাম কীভাবে ‘মোকা’ হলো।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে বিভিন্ন দেশ। যেমন এর আগে ‘সিত্রং’ ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছিল থাইল্যান্ড। তেমনই ‘মোকা’ নামটি দিয়েছে আরব সাগরের প্রান্তে অবস্থিত ইয়েমেন। যদিও ‘মোকা’ শব্দের আক্ষরিক কোনো অর্থ নেই।
ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের তথ্য অনুযায়ী, ইয়েমেন এই ঘূর্ণিঝড়ে নাম দিয়েছে তাদের বিখ্যাত বন্দর শহর মোকার (Mocha) নামে। ১৯ শতক পর্যন্ত মোকা ছিল ইয়েমেনের রাজধানী সানার প্রধান বন্দর। এই শহরেই বিখ্যাত কফি ‘মোকা’র চাষ হয়। কফির নামকরণও হয়েছে শহরের নামেই। বহু বছর ধরে মোকা বন্দর দিয়েই দেশ-বিদেশে ‘মোকা’ কফি রপ্তানি করা হয়।
বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে ১৩টি দেশ। ২০০০ সালের পর থেকে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও ওমান ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়। ২০১৮ সালে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশও এতে যুক্ত হয়।
ঝড়ের নামকরণের জন্য প্রত্যেক দেশ যেসব নাম প্রস্তাব করে সেগুলো ‘প্যানেল অন ট্রপিকল সাইক্লোন’ এর কাছে পেশ করা হয়। নাম ঠিক করার সময় কিছু বিষয় বিবেচনায় নিতে হয়। কোনো গোষ্ঠী বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে আঘাত করে এমন কোনো নাম গ্রহণ করা হয় না। নামে থাকতে হবে সর্বোচ্চ আটটি বর্ণ। নাম দেওয়ার পাশাপাশি এর উচ্চারণও নির্দিষ্ট করে দিতে হবে। এছাড়া নাম হতে হবে ধর্মীয় বিশ্বাস, সংস্কৃতি বা লিঙ্গ নিরপেক্ষ।
মোকার তথ্য যেভাবে পাওয়া যাবে
বাংলাদেশে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট (https://live7.bmd.gov.bd) এ সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার নির্ভরযোগ্য উৎস। বিস্তারিত জানার জন্য ওয়েবসাইটে ঢুকতে হবে। ঘূর্ণিঝড়ের ট্র্যাকিং, বাতাসের সতর্কতা, ঝড়ের জলোচ্ছ্বাসের সতর্কতা পাওয়া যায় এখানে।