ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হাত থেকে ফিরেছেন ফায়ে লুইস রামে এক বৃটিশ নারী। প্রথমে তার অ্যাপেন্ডিক্সে টিউমার ধরা পড়ে। তা জটিল আকার ধারণ করে। ফলে জীবনের আশা ছেড়ে দেন তিনি। চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হন। তারা তার অপারেশন করেন।
এ সময়ে ধরা পড়ে তার পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে ক্যান্সার। বিশেষ করে কিছু অঙ্গ একেবারে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত। ফলে চিকিৎসকরা তার শরীর থেকে কমপক্ষে আটটি অঙ্গ অপারেশনের সময় ফেলে দেন। এগুলো হলো ওই সার্জারিতে তার প্লিহা, গলব্লাডার, অ্যাপেন্ডিক্স , গর্ভাশয়, ইউটেরাস, ফ্যালোপিয়ান টিউবস, বেলি বাটন, গ্রেটার ও লেসার অমেন্টাম- যা পাকস্থলি ও ডিউডেনাম’কে পেটের অন্য প্রতঙ্গের সাথে যুক্ত করে, এমন কয়েকটি প্রত্যঙ্গ কেটে ফেলতে হয়। তাছাড়া তার লিভারের কিছু অংশ, ডায়াফার্ম ও পেলভিসের কিছু অংশও বাদ দিয়ে দিতে হয়। শরীর থেকে এতগুলো অঙ্গ হারানোর পরও দিব্যি বেঁচে আছেন ফায়ে লুইস। তিনি এখন কাজে ফিরেছেন। নিয়মিত অফিস করছেন। ফায়ে লুইস বিমানের একজন ডিপার্চারার।
২০২৩ সালে তার অ্যাপেডিক্সে টিউমার ধরা পড়ে। এরপর থেকে মৃত্যুর প্রস্তুুতি নিতে থাকেন ওয়েস্ট সাসেক্সের হরশামে বসবাসকারী ওই নারী। তবে সার্জারি শেষে নিজেকে সুস্থ দাবি করেছেন তিনি। বিবিসি রেডিও সাসেক্স’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি আরও জানান, ক্যান্সার ধরা পড়ার পর কাজে ফিরতে পারবেন কিনা তা নিয়ে ছিলেন অনিশ্চিতায়। সন্দেহ ছিল আর কখনও কাজে ফিরতে পারবেন কি না। তিনি বলেন, যদিও আমার কাজটি শারীরিক পরিশ্রমের। তবে আমি বিমান চলাচলের বিষয়টি ভালোবাসি এবং কাজে ফিরতে পেরে খুশি। ২০২৩ সালের বসন্তে পেটে ব্যাথা অনুভব করা শুরু করেন সাবেক এই মডেল। প্রাথমিকভাবে ঋতুস্রাবের সমস্যা মনে করে তিনি বিষয়টিতে গুরুত্ব দেননি। পরে আলট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে তার ডিম্বাশয়ে সিস্ট ধরা পড়ে। অপারেশন করে রোগ নিরাময়ের চেষ্টা করেন তিনি।
কিন্তুু এরপরই জানতে পারেন তিনি পিসিউডোমিক্সোমা পেরিটোনেই নামে এক বিরল টিউমারে আক্রান্ত। যা তলপেটে জেলির মতো এক ধরনের পদার্থ তৈরি করে। ওই টিউমার ফেটে ক্যান্সারের জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে তার শরীরে। এমন অবস্থায় দ্রুত অপারেশন করা হয় তার। আর অপারেশনের মাধ্যমে শরীরের ৮টি প্রত্যঙ্গ বাদ দিয়ে দিতে হয়। ফলশ্রুতিতে প্রতিবছর নভেম্বরে তাকে স্ক্যান করাতে হবে। তিনি আরও জানান, প্রতিবছর রিপোর্টের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করা হয় আমার ক্রিসমাস আনন্দময় হয়ে উঠবে নাকি আতঙ্ক নিয়ে বাঁচবো। তিনি আরও বলেন, জীবনে যেকোনো সময় এমন সমস্যার সম্মুখীন হওয়া লাগতে পারে। তবে ভেঙ্গে পড়লে চলবে না। এগিয়ে যেতে হবে। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে’র জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে থাকেন। তাছাড়া ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য তহবিল গঠনে ব্রিংটনে স্ট্যানার পার্কে রেস ফর লাইফ সম্পূর্ণ করেন তিনি।