উদ্ভিদটির নাম ‘লাশ ফুল’ বা বৈজ্ঞানিক ভাষায় অ্যামোরফোফ্যালাস টাইটানাম। এই বিরল ও বিপন্ন উদ্ভিদের ফুলটি ফোটার পর সিডনির একটি গ্রিনহাউজে শত শত দর্শনার্থীর আগমন ঘটিয়েছে। বৃহস্পতিবার ফুলটি ফুটেছে। সেই উদ্ভিদ থেকে বের হওয়া গলিত মাংস, ঘামে ভেজা মোজা ও পচা আবর্জনার মতো ঘ্রাণ সবাইকে আকৃষ্ট করেছে।
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রার বনাঞ্চল থেকে আসা এই উদ্ভিদটিকে সিডনির রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনের কর্মীরা আদর করে নাম দিয়েছেন ‘পুট্রিসিয়া’, যা ‘পুট্রিড’ ও ‘প্যাট্রিসিয়া’ শব্দের সমন্বয়ে তৈরি। সপ্তাহজুড়ে পুট্রিসিয়া তার ‘গথিক’ প্রদর্শনী দিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ১৫ বছরের মধ্যে এই বাগানে প্রথমবারের মতো এই উদ্ভিদে ফুল এসেছে।
সপ্তাহজুড়ে প্রায় ২০ হাজার দর্শনার্থী গাছটির পাশে দাঁড়িয়ে সময় কাটিয়েছেন। পুট্রিসিয়ার প্রভাবশালী ‘ভক্তরা’ নিজেদের পরিচয় দেন ‘পুট্রিশিয়ান’ হিসেবে। দর্শকদের জন্য লাল গালিচা ও ভেলভেট দড়ি দিয়ে সজ্জিত স্থানে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়, যা কুইন ভিক্টোরিয়ার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া এবং ডেভিড লিঞ্চের সিনেমার অনুপ্রেরণা থেকে তৈরি।
এই উদ্ভিদের ফুল ফোটার প্রক্রিয়া প্রাকৃতিকভাবে সাত থেকে দশ বছর সময় নেয়। বোটানিক্যাল গার্ডেনের মুখপাত্র সোফি ড্যানিয়েল বলেন, এই উদ্ভিদ খুবই ধীর গতিতে বিকাশ লাভ করে এবং নিজের পরাগায়ন করতে পারে না। তাই প্রাকৃতিক পরিবেশে বংশবৃদ্ধির জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
পুট্রিসিয়া ৭ বছর আগে বাগানে আনা হয়েছিল। ডিসেম্বরে যখন এটি প্রথম খুঁজে পাওয়া যায়, তখন এর উচ্চতা ছিল মাত্র ২৫ সেন্টিমিটার। বৃহস্পতিবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ১.৬ মিটার এবং এর পুষ্পমঞ্জরি উন্মোচিত হয়।
বাগান কর্তৃপক্ষ ভিড় সামলাতে বাধা দেওয়া শুরু করে। দর্শনার্থীরা ফুলের কাছাকাছি যেতে চেয়েছে, কেউ কেউ ফুলের সামনে সেলফি তুলেছে, কেউ আবার ঝুঁকে ঘ্রাণ নিয়েছে। এক তরুণী পুট্রিসিয়ার সামনে মাথা নত করে অভিবাদন জানান।