গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলায় ‘গাছ কথা বলে’-এমন একটি খবর ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। গাছটিকে দেখতে আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে মানুষ আসছেন। তারা গাছটিকে জড়িয়ে ধরে কান পেতে কথা শোনার চেষ্টা করছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা এটিকে গুজব বলে মনে করছেন।
জানা যায়, মুকসুদপুর উপজেলার গোজিনা গ্রামে সৌদি প্রবাসী সবুর মিয়ার গাছের বাগান রয়েছে। গত শুক্রবার বিকেলে সেখানে গাছ কাটতে যায় ওই গ্রামের জুয়েল মোল্লার ছেলে নীরবসহ কয়েকজন শিশু কিশোর। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে গাছটি কাটতে শুরু করার পর নাকি গাছ কথা বলতে শুরু করে। এ সময় তারা ভীত হয়ে বাড়ি গিয়ে লোকজনের কাছে জানালে তারা গাছটি দেখতে যান। তারা গাছের সাথে কান পেতে রাখলে গাছের ভেতর থেকে কিছু শব্দ শুনতে পান।
গোজিনা গ্রামের মামুন মল্লিক বলেন, ‘গ্রামের কয়েকজন শিশু কিশোর ওই গাছটি কাটতে যায়। গাছের গায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দিলে আমাকে মারিস না, আমাকে মারিস না বলে গাছের ভেতর থেকে কথা বলে ওঠে। পরে ওই শিশুরা বাড়ি গিয়ে তাদের পরিবারের লোকজনকে বিষয়টি জানালে তারা এসে গাছের সাথে কান পাতলে শব্দ শুনতে পায় এবং বিষয়টি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে মানুষ দলে দলে এ গাছটি দেখতে আসা শুরু করে।’
স্থানীয় রাঘদী ইউপি মেম্বার সাদ্দাম হোসেন বলেন, আগন্তুক ও কৌতূহলী মানুষ প্রতিদিনই গাছের গায়ে কান পেতে কথা শোনার চেষ্টা করছেন। শুধু বড়রাই নয়, কথা শোনার চেষ্টা করে শিশুরাও। অনেক লোকজন গাছের কথা শুনতে পান দাবি করে এটিকে অলৌকিক বলে মনে করছেন।
গোজিনা গ্রামের জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ বাদশা বলেন, ‘এটা কুসংস্কার। ইসলামের দৃষ্টিতে এটি সঠিক নয়। ধারণা করছি কোনো জিনকে গাছের মধ্যে আটকে রাখা হয়েছে। যে কারণে জিন বাইরে বের হওয়ার জন্য এমনটি করছে।’
তবে সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও উদ্ভিদ বিভাগের প্রধান শুকলাল বিশ্বাস এটিকে গুজব বলে মনে করছেন। তিনি বলেন, গাছ কথা বলে এটি সম্পূর্ণ গুজব ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ শব্দ করতে হলে তার ভোকাল সিস্টেম থাকতে হবে। জড় বস্তুর আঘাতজনিত কারণে শোঁ শোঁ শব্দ হয়।
তিনি আরও বলেন, এটা ঠিক গাছের প্রাণ আছে, কোষ দ্বারা গঠিত, কোষ একটি জীবন্ত সত্তা। তবে প্রাণী চলাচল করতে পারে, উদ্ভিদ চলাচল করতে পারে না। তবে উদ্ভিদের ব্যথা-বেদনা, দুঃখ সবই আছে। তবে কথা বলে এটি আমি প্রথম শুননাল, এটি পুরোটাই গুজব।