English

22 C
Dhaka
রবিবার, নভেম্বর ২৪, ২০২৪
- Advertisement -

ভারতে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ভিক্ষুক, মাসিক আয় কত?

- Advertisements -

শুধুমাত্র ভিক্ষা করে তিনি আজ বিশ্বের নামকরা সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে পরিণত হয়েছেন। ৪০ বছর ধরে চলা এই পেশায় তিনি কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। ছেলে-মেয়ে স্ত্রীর জন্য ক্রয় করেছেন অভিজাত এলাকায় আলিসান বাড়ি।

বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের নিয়েই শুধু সংবাদ শিরোনাম হয়। কার কত সম্পদ আছে তা নিয়ে চলে চুলচেরা বিশ্লেষণ। অন্যদিকে বিশ্বে হতদরিদ্ররা কোনো পথ না পেয়ে বেছে নেন ভিক্ষাবৃত্তি। এমনটাই ধারণা। ভিক্ষা করেই কিন্তু রেকর্ড গড়েছেন মুম্বইয়ের ভারত জৈন। তিনি এখন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ভিক্ষুক।

তার নিট সম্পদের পরিমাণ সাড়ে সাত কোটি রুপি। দারিদ্র্য ও হতাশাকে এক সময় দেখা হতো ভিক্ষার একটি লক্ষণ হিসেবে। কিন্তু সেই ভিক্ষা বা দারিদ্র্য কিছু মানুষের কাছে লোভনীয় একটি পেশা হয়ে উঠেছে। তাদের কাছে এটা এক লাভজনক পেশা।

এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া।

ভারত জৈনের বয়স এখন ৫৪ বছর। তিনি বসবাস করেন ভারতের অর্থনীতির রাজধানী হিসেবে পরিচিত মুম্বইয়ে। টিনেজ বয়স থেকে ৪০ বছর ধরে ভিক্ষা করছেন।

ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাল রেলওয়ে স্টেশন বা আজাদ ময়দানের মতো অভিজাত ও প্রসিদ্ধ এলাকাগুলোতে তিনি ভিক্ষা করেন। এতে দিনে তার আয় হয় দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার রুপি। দিনে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা ভিক্ষা করেন।

সাপ্তাহিক কোনো ছুটি বা ব্রেক নেন না। দেখতে জীর্ণ শীর্ণ মনে হলেও ভারত জৈন একজন সম্পদশালী ব্যক্তি। মুম্বইয়ে তার আছে মূল্যবান সহায় সম্পত্তি। পারেলে আছে তার একটি ‘২বিএইচকে’ ফ্লাট। এর মূল্য এক কোটি ২০ লাখ রুপি। সেখানেই স্ত্রী, দুই ছেলে, তার ভাই ও পিতাকে নিয়ে বসবাস ভারত জৈনের। ছেলেমেয়েকে একটি অভিজাত স্কুলে পড়িয়েছেন। তারা পড়াশোনা শেষ করেছেন।

ভারত জৈনের পরিবারের অন্য সদস্যরা একটি স্টেশনারি দোকান পরিচালনা করেন। থানে আছে তার দুটি দোকান। সেখান থেকে মাসে ভাড়া বাবদ পান ৩০ হাজার রুপি।

ভারত জৈনের ভিক্ষাবৃত্তি নিয়ে মোটেও অসন্তুষ্ট নন পরিবারের সদস্যরা। তাকে এই ভিক্ষা বন্ধ করার পরামর্শও খুব কম দেন তারা। যদি কখনো এমন পরামর্শ দেয় কেউ, তিনি তা উপেক্ষা করে ভিক্ষাবৃত্তি চালিয়ে যান। ভারত জৈন বলেন, ভিক্ষা করে তিনি আনন্দ পান। তার এই লাইফস্টাইল তিনি ছেড়ে দিতে চান না।

বলেন, অভাবের কারণে তিনি এখন আর ভিক্ষা করেন না। ভিক্ষা করেন পছন্দ অনুযায়ী। তিনি নিজেকে লোভী বলতে নারাজ। তবে তিনি উদার। বিভিন্ন উপাসনালয়ে এবং দাতব্য সংস্থায় অর্থ দান করেন।

ভারতে বিপুল সম্পদ গড়ে তোলা একমাত্র ভিক্ষুক ভারত জৈন নন। আরও অনেক ভিক্ষুক আছেন। তারা ভিক্ষা করে লাখ লাখ রুপির সম্পদ বানিয়েছেন। এমন ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন সম্ভাজি কালে। তার নিট সম্পদের পরিমাণ দেড় কোটি রুপি। আরেকজন ভিক্ষুক হলেন লক্ষ্মী দাস। তার নিট সম্পদের পরিমাণ এক কোটি রুপি। ভারতে ভিক্ষাবৃত্তি একটি শিল্পের মতো বিকশিত হচ্ছে। এরই অংশ এসব ভিক্ষুক। তাদের নিট সম্পদের পরিমাণ দেড় লাখ কোটি রুপি বা ২০০০ কোটি ডলার।

ভারতে ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ। ভিক্ষা বন্ধে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে আছে জরিমানা করা, ভিক্ষুকদের গ্রেপ্তার করা এবং তাদের পুনর্বাসন করা। কিন্তু এসব ব্যবস্থা খুব বেশি কাজে আসেনি। কাজ করার চেয়ে অনেক মানুষ ভিক্ষাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। কেউ কেউ ভিক্ষাবৃত্তির একটি চক্র গড়ে তুলেছেন। তারা অন্য ভিক্ষুকদের বিপথগামী করছে। বহু মানুষ ভিক্ষুকদের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং উদার। তাদেরকে মাঝে মাঝেই তারা অর্থ, খাদ্য ও পোশাক দান করেন। ভিক্ষাবৃত্তি কিভাবে লোভনীয় এবং লাভজনক পেশা হতে পারে তার একটি উদাহরণ হলেন ভারত জৈন। তার মতো করেই কিছু ভিক্ষুক হয়ে উঠছেন মিলিয়নার। তিনি বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ধনী ভিক্ষুক। এ জন্য তিনি গর্ববোধ করেন।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন