ভারতের তেলেঙ্গানায় প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করেছেন দুই সমপ্রেমী পুরুষ। ৩৪ বছরের তেলেঙ্গানার বাসিন্দা অভয় দাঙ্গের সঙ্গে ৩১ বছর বয়সী বাঙালি যুবক সুপ্রিয় চক্রবর্তী গত শনিবার গাঁটছড়া বাঁধেন। রিসোর্টে এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিয়ে হয় তাদের। যদিও ভারতে সমপ্রেমী বিবাহ আইনত স্বীকৃত নয়। এই আনুষ্ঠানিক বন্ধনের সমগ্র আয়োজন করেছেন যুগলের হায়দরাবাদের বন্ধু তথা LGBTQ সম্প্রদায়ের সদস্য সোফিয়া ডেভিড।
হায়দরাবাদের বাঙালি যুবক সুপ্রিয় এবং পাঞ্জাবি যুবক অভয় বর্তমানে আইটি ক্ষেত্রে কর্মরত। তাদের সম্পর্ক গড়ে ওঠার প্রথম ধাপ আর পাঁচটা প্রেমের মতোই। তারা যে আর পাচটা ছেলের থেকে কিছুটা আলাদা, তাদের পছন্দ আলাদা তা স্কুলজীবন থেকেই টের পেয়েছিলেন। আট বছর আগে ‘প্ল্যানেট রোমিও’ ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে পরস্পরের সঙ্গে পরিচয় হয়। তারপর বহুবার তারা ডেটে যান। অবশেষে গত বছরের তারা একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। সামাজিক ভীতির গণ্ডি পেরিয়ে গত অক্টোবরে প্রথম সোশ্যাল মিডিয়ায় অভয়কে বিয়ে করার ঘোষণা করেন সুপ্রিয়।
এদিনের বিবাহ অনুষ্ঠানে দুজনেই উপস্থিত হয়েছিলেন বরের বেশে। দু’জনেরই পরনে ছিল সাদা স্যুট। তাদের পরিবার, বন্ধু ছাড়াও LGBTQ গোষ্ঠীর সদস্যসহ প্রায় ৬০ জন ওই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন। সরকারি আইন উপেক্ষা করে দুই সমকামীর বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া প্রসঙ্গে তারা বলেন, ‘ধর্ম বা রীতিনীতির বাধা ছাড়াই আমরা এটিকে সাধারণভাবেই উদযাপন করছি।’
সুপ্রিয় বলেন, ‘সম্পর্কের প্রধান মূল্যবোধ হল, গ্রহণযোগ্যতা। আমরা একে-অপরকে বদলানোর চেষ্টা করব না। আমি মনে করি, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধার উপরই একটা সম্পর্ক দাঁড়িয়ে থাকে এবং আমরা এব্যাপারে কখনও সমঝোতা করব না।’ তাদের দেখে এবার সমকামীরা নিজেদের মেলে ধরতে পারবে এবং সাধারণ সমপ্রেমী সম্পর্ক রাখতে পারবে বলেও আশাবাদী দম্পতি।
সুপ্রিয় আরও বলেন, ‘পরিবার আমাদের সম্পূর্ণভাবে সমর্থন জানায়নি। তবে আমাদের আরও ভালো পরিণতির জন্য সময় দিয়েছে।’