অফিস দূরে হলে যাতায়াতের কষ্ট এড়াতে অনেকেই কাছাকাছি বাসা নেওয়ার চেষ্টা করেন। তাতে শ্রম ও সময় দুটোই বাঁচে। কিন্তু যদি দেখা যায়, ওই এলাকায় বাসাভাড়া এত বেশি যে, সেখানে থাকার চেয়ে দূর থেকে আসাই সাশ্রয়ী, তাহলে সেই কষ্টটুকু মেনে নিতে নিশ্চয় রাজি হবেন অনেকে। ঠিক সেটাই করেছেন ২১ বছরের সোফিয়া ক্যালেন্টানো।
মার্কিন এ তরুণী ইন্টার্নশিপের জন্য প্লেনে চড়ে যুক্তরাষ্ট্রের এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে গিয়ে অফিস করছেন নিয়মিত। তার এই ঘটনা বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
মর্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসির খবরে জানা যায়, বাবা-মায়ের সঙ্গে সাউথ ক্যারোলিনায় থাকেন সোফিয়া। চলতি মাসের শুরুর দিকে নিউ জার্সির পার্সিপানিতে অবস্থিত ওগিলভি হেলথ নামে একটি সংস্থায় ইন্টার্নশিপ শুরু করেছেন তিনি। এর জন্য প্রতি সপ্তাহে এক থেকে দু’বার অফিসে হাজির হতে হয়। আর সেই দিনগুলোতেই সাউথ ক্যারোলিনা থেকে নিউ জার্সি পর্যন্ত প্লেনে যাত্রা করেন এ তরুণী।
নির্ধারিত দিনগুলোতে ভোর সাড়ে ৩টায় অ্যালার্মের আওয়াজে ঘুম ভাঙে সোফিয়ার। এরপর ঝটপট তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়েন চার্লসটন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে। সেখান থেকে প্লেনে চার ঘণ্টার পথ পেরিয়ে পৌঁছান নিউ জার্সিতে।
আকাশছোঁয়া বাড়িভাড়া দেওয়ার চেয়ে এত ঝক্কি পেরিয়ে অফিসে পৌঁছানোকেই উত্তম বলে মনে হয়েছে সোফিয়ার কাছে। ভার্জিনিয়া ইউনিভার্সিটির এ শিক্ষার্থীর কথায়, এ নিয়ে আমাকে দ্বিতীয়বার ভাবতে হয়নি।
কিন্তু কেন? সোফিয়া জানান, গত বসন্তে যখন তিনি ইন্টার্নশিপের প্রস্তাব পান, তখন থেকেই পার্সিপানি ও নিউইয়র্কে বাসাভাড়া সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন।
অ্যাপার্টমেন্ট ডটকম ও রেন্টহপের তথ্য অনুযায়ী, পার্সিপানিতে একেকটি স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টের মাসিক ভাড়া প্রায় ১ হাজার ৭৩০ মার্কিন ডলার আর নিউইয়র্কে তা সাড়ে তিন হাজার ডলারের কাছাকাছি। এর বাইরে ইউটিলিটি, গ্রোসারি, গ্যাসসহ অন্যান্য খরচ তো রয়েছেই।
বিপরীতে, চার্লসটন থেকে নেওয়ার্ক লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত সপ্তাহে একবার রাউন্ড-ট্রিপ ফ্লাইট, বিমানবন্দর থেকে অফিস পর্যন্ত উবারে যাতায়াত এবং খাবারসহ খরচ পড়ছে মোটামুটি ২২৫ ডলার।
ফলে ১০ সপ্তাহের ইন্টার্নশিপের জন্য বাড়ি ভাড়া নিয়ে পকেট খালি করাকে যুক্তিযুক্ত মনে হয়নি সোফিয়ার কাছে। তার চেয়ে সপ্তাহে ছয়দিন বাড়িতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকা, তাদের রান্না করা খাবার খাওয়া এবং একদিন কিছুটা কষ্ট করে ভিনরাজ্যের অফিসে হাজির হওয়াকেই বেশি যুক্তিসঙ্গত মনে হয়েছে তার কাছে।