পৃথিবীর প্রায় সব বাস্তুতন্ত্রেই প্রাকৃতিকভাবে মদ্যজাতীয় পদার্থের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। ফলে মিষ্টি ফল ও ফুলের মধুরস ভক্ষণকারী প্রায় সকল প্রাণীরই মাঝে মাঝে অ্যালকোহল গ্রহণের অভ্যাস থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ ছাড়া অন্যান্য অনেক প্রাণীও প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট মদ্যপান করে এবং তা অনেক প্রজাতির মধ্যে একটি প্রাতিষ্ঠানিক অভ্যাসের রূপ নিয়েছে।
এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক আনা বোওল্যান্ড বলেন, আমরা এখন সেই দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে যাচ্ছি যে, শুধুমাত্র মানুষই অ্যালকোহল ব্যবহার করে। প্রকৃতিতে প্রকৃতপক্ষে ইথানল বা অ্যালকোহল প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান।
গবেষকদের মতে, অনেক প্রাণী মদ্যপান সহ্য করার সক্ষমতা অর্জন করেছে এবং তা থেকে (অ্যালকোহল থেকে) অতিরিক্ত কোনো প্রভাবের চেয়ে কেবল ক্যালরি লাভ করে। কিছু প্রজাতি আবার নিজেকে এ প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হলেও কিছু প্রজাতির পক্ষে তা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
গবেষণার তথ্যমতে, প্রায় ১০ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে ফুল ও ফলের মাধ্যমে ইথানলের বিস্তার ঘটে, যেটি গাঁজন প্রক্রিয়ায় মদে রূপান্তরিত হয়। অতি পাকা ফল বা মধুরসে সাধারণত ১% থেকে ২% পর্যন্ত অ্যালকোহলের পরিমাণ থাকে, তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি ১০% পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
দক্ষিণ-পূর্ব গিনিতে এক গবেষণায় দেখা গেছে, বুনো শিম্পাঞ্জিরা রাফিয়া পাম গাছের মদ্যপূর্ণ রস পান করছে। অন্যদিকে, পানামার বারো কলোরাডো দ্বীপের মাকড়শা বানর মোমবিন ফলের মদ্যপায়ী হয়ে উঠেছে। সেখানে অ্যালকোহলের পরিমাণ ১% থেকে ২.৫% পর্যন্ত পাওয়া গেছে।
প্রাণীদের মদ্যপানের এই অভ্যাস মানবজাতির একক নয় বরং প্রকৃতির বিশাল ভাণ্ডারে বিদ্যমান – এটাই গবেষণায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।