তাপমাত্রা মাইনাস ৩০ ডিগ্রিরও নিচে, চারদিকে বরফের পুরু স্তূপ। এমন আবহাওয়ার মধ্যেই খোলা চুলে বাইরে বের হয়েছিলেন এক তরুণী। কিছুক্ষণ বাইরে থাকার পর বরফ পড়ে জমাট বেঁধে যায় তার মাথার চুল। ওই চুলের একটি ভিডিও করেন তরুণী, পোস্ট করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেটি রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে নেট দুনিয়ায়।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ওই তরুণী নাম এলভিরা লুন্ডগ্রেন। তিনি ইউরোপের দেশ সুইডেনের বাসিন্দা এবং বেশ জনপ্রিয় একজন ইনস্টাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সার।
এলভিরা জানিয়েছেন, তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ৩০ ডিগ্রি নিচে নেমে গেছে শুনেই বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিলেন। এত কম তাপমাত্রায় বাইরে বের হলে কী হয়, তা দেখতে চেয়েছিলেন।
ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যায়, জমে যাওয়া চুল মাথার ওপরে মুকুটের মতো তুলে ধরছেন এলভিরা। জমাট বেঁধে যাওয়া চুল উপরে উঠিয়ে ও নিচে নামিয়ে দেখাচ্ছিলেন তিনি।
সামাজিকমাধ্যমে এই ভিডিও নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মজা পেয়েছেন তরুণীর চুলের দশা দেখে। অনেকে আবার এই হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় যথেষ্ট প্রস্তুতি ও সুরক্ষা ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হওয়ার বিরোধিতা করেছেন। এই ঘটনাকে কেউ কেউ ওই তরুণীর ভাইরাল হওয়ার চেষ্টা বলে মনে করছেন।
জানা গেছে, এবার একটু বেশিই শীত পড়ছে সুইডেনে। গত ৩ জানুয়ারি দেশটির উত্তরাঞ্চলের তাপমাত্রা মাইনাস ৪৩ দশমিক ৬ ডিগ্রিতে নেমে গিয়েছিল, যা সুইডেনের গত ২৫ বছরের ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। ২৫ বছর আগে দেশটির তাপমাত্রা মাইনাস ৪৯ ডিগ্রিতে নেমেছিল। ১৯৫২ সালেও এই একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
সুইডেনের জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা এসএমএইচআইয়ের প্রধান ম্যাথিয়াস লিন্ড বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ১৯৯৯ সালের পর সুইডেনে জানুয়ারিতে মাইনাস ৪৩ দশমিক ৫ তাপমাত্রাই সর্বনিম্ন।
ম্যাথিয়াস লিন্ড আরও জানিয়েছেন, উত্তরাঞ্চলের কেভিকজোক-আরেনজানকা কেন্দ্রে মাইনাস ৪৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ১৮৮৮ সাল থেকে তাপমাত্রার রেকর্ড রাখা শুরুর পর এই কেন্দ্রে এটিই সবচেয়ে কম তাপমাত্রার রেকর্ড।
সুইডেনের সাধারণ মানুষ এ ধরনের আবহাওয়ার সঙ্গে পরিচিত। তবে গত কয়েকদিনে তাপমাত্রা এতই কমেছে যে, সেখানে অনেক জায়গায় বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, উমিয়া শহরের উত্তর অংশে বেশ কয়েক দিনের জন্য ট্রেনের সব শিডিউল বাতিল করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।