শিরোনাম পড়ে কেঁপে উঠলেন? সেটাই স্বাভাবিক। কিশোরীর এই কাণ্ডের খবর এখন গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, মেয়েটি যে চুলটি গিলে ফেলেছে সেই চুলটি কিশোরীর পেটের ভেতরে গোল পাকিয়ে ৪৮ সেন্টিমিটার লম্বা আকার ধারণ করেছিল।
কিশোরীর বয়স মাত্র ১৭ বছর। এমনকি আরও ভয়ের বিষয় হলো যে সেই চুলের ড্যালা তার পাকস্থলীর পর্দা ছিঁড়ে দিয়েছে। ঘটনাটি যুক্তরাজ্যের।
৪৮ সেন্টিমিটার লম্বা চুলটি মেয়েটির সমগ্র পাকস্থলী জুড়ে ছড়িয়ে ছিল। সে রাপুনজেল সিনড্রোমের শিকার হয়েছিল। এই বিরল রোগটি চুল গিলে ফেলার ফলে হয়ে থাকে মানুষের মধ্যে। সে দুইবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এরপরই তাকে নেয়া হয় হাসপাতালে। অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে যাওয়ার ফলে তার মুখে এবং তালুতে আঘাত লেগেছে।
ডাক্তারেরা দেখেন যে তার পেটের উপরের অংশ ফুলে রয়েছে। প্রাথমিকভাবে তারা ভাবে যে মাথায় আঘাত পাওয়ার ফলে তার থেকেই এমনটা হয়েছে। মেয়েটি স্বীকার করেছে, যে ৫ মাসে সে কয়েকবার পেটে খুবই ব্যথা অনুভব করেছে।
তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগের দুই মাসে ব্যথা আরও বেড়ে গিয়েছিল। সিটি স্ক্যান থেকে ধরা পড়ে যে তার পাকস্থলীর গা ঘেঁষে থাকা পর্দার আস্তরণ ছিঁড়ে গেছে এবং বড়ো ধরণের কিছু জিনিস পাকস্থলীতে আটকে রয়েছে।
জানা গেছে, সেই মেয়েটির একটি অভ্যাস ছিল যে সে নিজের চুল নিজেই টানতো এবং গিলে ফেলতো। এই রোগটিকে ট্রাইকোটিলোম্যানিয়া বলে। চুলটি এতোটাই লম্বা ছিল যে সেটি পাকস্থলীর আকার নিয়েছিল।
“ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর রেয়ার ডিস অর্ডারস”-এর মতে, ০.৫% থেকে ৩%-র মধ্যে মানুষ জীবনের কোনো এক সময়ে ট্রাইকোটিলোম্যানিয়ার শিকার হয়ে থাকে। অন্যদিকে, ১০% থেকে ৩০%- মানুষের আবার ট্রাইকোটিলোম্যানিয়ার পাশাপাশি ট্রাইকোফেজিয়া হয়ে থাকে। এই কিশোরীর মতোই এক রকম একটি ঘটনায় ১৬ বছরের একটি কিশোরীর মৃত্যু হয়েছিল। যুক্তরাজ্যের এই কিশোরীকে ৭ দিনের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। তবে বিষয়টি সত্যি ভাবিয়ে তুলেছে অভিভাবকদের।