বর্তমান যুগে কসমেটিক সার্জারির ছড়াছড়ি। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কেউ পাল্টে ফেলছেন নিজের ঠোঁট, কেউ নাক, কেউ ত্বক, অনেকে আবার মেদ ঝরিয়ে ফেলছেন। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান মডেল জেনিফার পামপ্লোনা যা করেছেন তা শুনলে অনেকেরই চোখ কপালে উঠবে। ভার্সেসের এই প্রাক্তন মডেল নিজেকে কিম কার্দাশিয়ানের মতো চেহারার অধিকারী করে তুলতে চেয়েছিলেন। শরীরে অস্ত্রোপচারের জন্য খরচ করেছিলেন ৪ কোটিরও বেশি টাকা। এখন তিনিই নিজের আসল চেহারায় ফিরতে আবার ৯৫ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন। ২৯ বছর বয়সী জেনিফার ১২ বছরে ৪০ টিরও বেশি কসমেটিক সার্জারি করেছেন। কিন্তু চেহারার রূপান্তর নিয়ে খুশি ছিলেন না এই মডেল।
জেনিফার জানিয়েছেন, ২০১০ সালে ১৭ বছর বয়সে তার কিমের মতো হওয়ার সাধ হয়। সেই মতো নিজেকে বদলাতে শুরু করেন। সেই সঙ্গে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে শুরু হয় একের পর এক অস্ত্রোপচার।
৪ কোটি টাকা ব্যয়ে একাধিক সার্জারি, ট্রিটমেন্ট ও ইঞ্জেকশনে প্রায় কিম হয়ে ওঠেন তিনি। মোট ৪০টি কসমেটিক প্রক্রিয়ার পর ভোল বদল হয় তার। কার্দাশিয়ানের মতো দেখতে হয়ে যাবার পর তার ইনস্টাগ্রাম ফলোয়ারের সংখ্যা পৌঁছে যায় এক মিলিয়নে। কিন্তু অস্ত্রোপচারে আসক্ত হয়ে যাবার পর জেনিফারের একাধিক শারীরিক সমস্যা শুরু হয়। তিনি নিজে একজন সফল ব্যবসায়ী হলেও রাস্তা ঘাটে লোকে তাকে কিম কার্দাশিয়ান ভাবতে শুরু করে। ধীরে ধীরে ব্যক্তিত্বের সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন জেনিফার।
নিজের অস্তিত্ব নিয়ে দ্বন্দে পড়ে যান। খ্যাতির শিখরে উঠতে গিয়ে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি। নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে এই ব্রাজিলীয় মডেল জানান, “ডিট্রানজিশন” অস্ত্রোপচারের সময় সাংঘাতিক জটিলতায় ভুগছিলাম, সংক্রমণ শুরু হয়ে যাবার পর তিন দিন ধরে গাল থেকে রক্তপাত হয়েছিল। আমি ভেবেছিলাম আমি বুঝি মারা যাবো, তারপর ভাবলাম আমার জীবন নিয়ে আমি একি করছি?” অবশেষে, বছরের পর বছর মন খারাপ করে থাকার পর জেনিফার নিজের ভুল বুঝতে পেরে নিজের আসল চেহারায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন।
ইস্তাম্বুলের একজন ডাক্তার তাঁকে আসল চেহারায় ফিরে যেতে সাহায্য করেছিলেন। এবার এই সমস্ত কিছু থেকে মুক্তি পেতে চান জেনিফার পামপ্লোনা। এমনকী কসমেটিক সার্জারি নিয়ে বর্তমান প্রজন্মের আসক্তির বিষয়ে সচেতনতা প্রচারেও সামিল হচ্ছেন তিনি।