গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় প্রেমের টানে আমেরিকা থেকে লিডিয়া লুজা (২৯) নামের এক তরুণী বাংলাদেশে চলে এসেছেন। ঈদের পরদিন সোমবার ভোরে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে আসলে প্রেমিক ইমরান খান (৩০) তাকে রিসিভ করে গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের কুমারভিটা এলাকায় নিয়ে যান। ইমরান স্থানীয় জালাল উদ্দিন মাস্টারের ছেলে। ভিনদেশি এ তরুণী ইমরানের পারিবারে আসায় তাদের ঈদ আনন্দে ভিন্ন মাত্রা যোগ দিয়েছে।
সোমবার এলাকায় এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পাড়া-প্রতিবেশীরা এ দম্পতিকে দেখতে ভিড় করছেন। লিডিয়া লুজা জানান, তিনি আমেরিকার অ্যারিজোনা স্টেটের বাসিন্দা। তার বাবা নেই, মা অন্য সংসারের সদস্য। দুই ভাইয়ের একমাত্র বোন তিনি। ছোটবেলা থেকেই লিডা লুজা তার দাদুর সঙ্গে বড় হয়েছে। ধর্মান্তরিত হয়ে এখন তার নামের সাথে স্বামীর পরিবারের উপাধি হিসেবে খান শব্দটি যুক্ত হয়েছে। তিনি নিজ দেশ আমেরিকায় একটি চাকরিতে যুক্ত ছিলেন। এখন বেকার সময় কাটাচ্ছেন। বাংলাদেশের যুবক ইমরান খান গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার বরমী কুমারভিটা এলাকার মৃত জালাল উদ্দিন মাস্টারের ছেলে। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের চূড়ান্ত বষের্র ছাত্র। চারভাই এক বোনের মধ্যে ইমরান সবার ছোট।
লিডিয়া লুজা বলেন, ফেসবুকের কল্যাণে তাদের মধ্যে পরিচয় হয়। ফেসবুকে আলাপচারিতায় ইমরানকে তার ভালো লেগে গেছে। উভয় পরিবারের সম্মতিতেই তিনি ধর্মান্তরিত হয়ে বিবাহের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেন, ইমরান একজন সহজ-সরল, সৎ ও ভালো মানুষ। সব মানুষ তার ভাষা না বুঝার কারণে সবার সাথে কথা বলতে তার একটু সমস্যা হচ্ছে। তিনি স্থানীয় বরমী বাজার ও আশপাশের প্রকৃতি ঘুরে দেখেছেন। বাংলাদেশিদের অতিথি পরায়ণতা লুজাকে খুব মুগ্ধ করছে। বাংলাদেশের প্রকৃতি ও মানুষকে তার খুব ভালো লেগেছে।
লুজা জানায়, তার শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম অসুস্থ। তাই মাঝে মধ্যে আমেরিকা যাবেন এবং বেশিরভাগ সময় স্বামী ইমরানের বাড়িতেই থাকবেন। শাশুড়ি সুস্থ হলে ইমরানকে নিয়ে আমেরিকায় বসবাস করবেন। ইমরান খান জানান, এ বছরের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয়। মাসখানেক পর লিডিয়া লুজা তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। প্রথমে তিনি তার প্রস্তাব বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
পরে ৫ই মার্চ আমেরিকা থেকে তুর্কি হয়ে লুজা বাংলাদেশের হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত চলে আসেন লুজা। কিন্তু অন অ্যারাইভাল না থাকায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সেখান থেকে সেদিন তাকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। ইমরান জানান, পরে উভয় পরিবারের সিদ্ধান্তে তারা নেপালে গিয়ে সাক্ষাত করেন এবং সেখানে এবছরের ২৫ মার্চ নেপালের একটি মসজিদে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়েতে ইমরানের সঙ্গে ওই সময় তার পরিবারের সদস্য থাকলেও লুজার পরিবারের কেউ ছিলেন না। নেপালে তারা কয়েকদিন অবকাশ কাটিয়ে যার যার দেশে ফিরে যান। পরে ইমরানের সহযোগিতায় ভিসা সম্পাদনের মাধ্যমে ১১ জুলাই সোমবার লুজা খান বাংলাদেশে আসেন।
ইমরানের মা আনোয়ারা বেগম জানান, আমেরিকার মেয়েকে বিয়ে করায় তিনি খুশি হয়েছেন। যেহেতু ধর্মান্তরিত হয়ে তারা এ বিয়েতে আবদ্ধ হয়েছে সেজন্য তিনি খুশি হয়েছেন এবং তাদেরকে পারিবারিকভাবে মেনে নিয়েছেন। গত ২৯ মে প্রেমের টানে আমেরিকান প্রেমিক রাইয়ান কফম্যান গাজীপুরের ভোগড়া এলাকায় ছুটে আসেন এবং সেখানে সাইদা ইসলাম নামের এক যুবতীকে বিয়ে করে ঘর-সংসার করছেন।
গাড়ির ড্রাইভার সচেতন হলে নিরাপদ সড়ক হবে