ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারী তাপস সান্দিল্য। ২০২২ সালে কোভিড মহামারীর সময় তিনি তার ৩৯ বছরের স্ত্রীকে হারিয়েছিলেন। স্ত্রী ইন্দ্রানীকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তখন তিনি নিজে ছিলেন আইসোলেশনে। তাকে তার স্ত্রী থেকে আলাদা থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল। তাই স্ত্রী মারা যাওয়ার সময় তার পাশে থাকতে পারেননি।
স্ত্রীর শেষ ইচ্ছা পূরণ করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তাপস এমন একজন শিল্পীকে খুঁজতে শুরু করেছিলেন, যে ইন্দ্রানীর মতো দেখতে একটি সিলিকন মূর্তি তৈরি করতে পারে। মূর্তিটি বানাতে লেগেছে ৬ মাস এবং ব্যয় হয়েছে ৩০০০ ডলার।
তাপস বলেন, ‘আমরা এক দশক আগে মায়াপুরের ইসকন মন্দিরে গিয়েছিলাম এবং সেখানে ভক্তিবেদান্ত স্বামীর প্রাণবন্ত মূর্তি দেখে প্রশংসা করা বন্ধ করতে পারিনি।’ তাপস সান্দিল্য টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে বলেছিলেন, ওই মূর্তি দেখে ইন্দ্রাণী বলেছিল, তাপসের আগে তার মৃত্যু হলে এমন একটি মূর্তি যেন বানায়। আর স্ত্রীর এই শেষ ইচ্ছা রাখতেই তাপসের এতো চেষ্টা।
গত বছর তাপস পেয়েও যান একজন ভাষ্করকে। যিনি তাপসের প্রয়াত স্ত্রীর মতো দেখতে সিলিকন মূর্তি বানিয়ে দিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। প্রথমেই মাটি দিয়ে একটি আকার তৈরি করা হয় এরপর সিলিকনের ঢালাই দেওয়া হয়। ৬৫ বছর বয়সী তাপস বলেছেন, বানানোর পর মূর্তিটি তার বেশ পছন্দ হয়েছে। দেখতে একদম জীবন্ত!
মূর্তিটির ওজন ছিল ৩০কেজি। পরণে আছে সিল্কের শাড়ি এবং গয়না। তাপসের বাড়িতে এবং পরিবারের প্রিয় জায়গায় একটি দোলনায় তাকে স্থায়ীভাবে বসিয়ে রাখা হয়েছে। এমন জীবন্ত দেখতে মূর্তি স্থাপনে তার পরিবার বিরোধিতা করলেও প্রতিবেশীরা এবং কিছু আত্নীয় তাকে সাহায্য করেছিল বলে জানান তাপস।