শিক্ষক বা শিক্ষিকা হচ্ছেন মানুষ গড়ার কারিগর। কিন্তু তাদের হাতেই যদি ছাত্র বা ছাত্রী যৌন নির্যাতনের শিকার হন তাহলে সমাজে মানুষ নিরাপদ থাকবে কোথায়! যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার এক ঘটনায় এ কথাগুলো সামনে চলে এসেছে। সেখানে ১৮ বছর বয়সী এক ছাত্রের সঙ্গে শিক্ষিকা গাব্রিয়েলা নিউফেল্ডের সম্পর্কের গুজব কানে যায় ওই ছাত্রের মায়ের। তিনি ওঁৎ পেতে থাকেন। এক পর্যায়ে একটি পার্কের ভিতর তিনি সত্যি দেখতে পান খবরটি আসলে গুজব নয়, সত্যি। সেই পার্কের ভিতর নিজের গাড়ির পিছনের সিটে ১৮ বছর বয়সী ওই ছাত্রের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত শিক্ষিকা নিউফেল্ড। এক্ষেত্রে ছেলে কোথায় যায়, কি করে, তা শনাক্ত করতে তার মোবাইল ফোন ট্র্যাক করা শুরু করেন তার মা। অবশেষে ওই পার্কে প্রমাণ পেয়ে যান তিনি। ছেলে তার কাছে বলে বেরিয়েছিল যে, সে রাগবি খেলা প্রাকটিস করবে। কিন্তু যখন শিক্ষিকার গাড়িতে অমন শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত অবস্থায় দেখতে পান তিনি, তার চোখ তখন ছানাবড়া।
এ খবর দিয়েছে লন্ডনের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ।
সাউথ মেকলেনবার্গ হাইস্কুলের জীববিজ্ঞানের শিক্ষিকা নিউফেল্ড। ওই ঘটনা ধরা পড়ার পর তিনি চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন। তারপর তাকে গ্রেপ্তার করে একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার মতো নোংরা অভিযোগ গঠন করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। আদালতের কাছে জানানো হয়েছে, তিনি ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে এভাবে কমপক্ষে ৫ বার শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হয়েছেন। তাদের এই সম্পর্ক নিয়ে গুজব ছিল আগে থেকেই। ফলে আদালত বলেছে, বিষয়টি তার স্কুল জানতো।
এ নিয়ে আদালত স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। শুনানির দিন শিক্ষিকার পরিবার এবং শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপ উপস্থিত ছিল। স্কুলটির প্রিন্সিপ্যাল মার্ক অ্যাঙ্গেরার এক বার্তায় অভিভাবকদের বলেছেন, যদিও আমি ব্যক্তিগত বিষয়ে আলোচনা করতে চাই না, তবুও বলতে হচ্ছে এ বিষয়টিকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। এমন পরিস্থিতিতে আপনাদের উদ্বেগের বিষয়ে আমরা মূল্যায়ন করি। শিক্ষার্থী এবং স্টাফদের নিরাপত্তা আমাদের কাছে সবার আগে গুরুত্বপূর্ণ। তারপরও যখন এমন হতাশাজনক ঘটনা ঘটে, তখন তা আইন প্রয়োগকারীরা দেখবে।
যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে উভয়ের সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্কের বয়স ১৮ বছর। এক্ষেত্রে ওই শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থী উভয়কে একই রকম অভিযোগে অভিযুক্ত করা হতে পারে। আইনি মারপ্যাচে দেখা হচ্ছে তাদের শারীরিক সম্পর্ক উভয়ের সম্মতিতে হয়েছিল কিনা। এক্ষেত্রে তারা ছাড় পেতেন যদি উভয়ে বিবাহিত হতেন। এ ক্ষেত্রে সাউথ ক্যারোলাইনাতে আইন অতোটা শক্তিশালী নয়। যদি একজন শিক্ষার্থীর বয়স ১৮ বছরের ওপরে হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে এমন আচরণে অভিযোগ লঘু হতে পারে। ওদিকে শিক্ষিকা নিউফেল্ডের বাড়ি নর্থ ক্যারোলাইনার বুনি’তে। তিনি আপালচিয়ান স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। তিনি ওই স্কুলে নবম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জীববিজ্ঞান পড়াতেন।