বনবিভাগ জানিয়েছে, সোমবার সকালে তাদের ২৫টি টিম অগ্নিকাণ্ডের পুরো এলাকা ঘুরে আগুনের অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। বনবিভাগ আরও দুই দিন ওই এলাকা সার্বক্ষণিক পযবেক্ষণ করবে। এ ঘটনায় তদন্ত কাজ শুরু করেছে তারা।
আগুনে সুন্দরবনের জীববৈচিত্রের ক্ষতির পরিমাণ নিরুপনের জন্য আজ সোমবার বিকেল নাগাদ প্রধান বন সংরক্ষকের পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হবে বলে জানা গেছে।
বন কর্মকর্তাদের ধারণা, বনের ওই এলাকায় মাটির ওপর কয়েক ইঞ্চি পুরু জৈব পদার্থ মজুদ হয়েছে। কাজেই এই গরমে সেখানে নিচের দিক থেকে মিথেন গ্যাস মজুদ হয়ে আগুন লাগতে পারে। অথবা মৌয়াল বা কোনো মানুষের বিড়ি-সিগারেটের অংশ থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
বন বিভাগের বিভিন্ন কর্মকর্তারা জানান, বনের প্রায় পাঁচ একর এলাকায় দুইদিন ধরে বিক্ষিপ্তভাবে আগুনে পুড়েছে। মাটিতে পড়ে থাকা লতা-পাতা, ডালপালা আর মাটির নিচে গাছের শিকরের মধ্যে দিয়ে আগুনের বিস্তৃতি পায়। আগুন যাতে ছড়াতে না পারে এজন্য আগুনের ওই স্থানের চারদিক থেকে প্রায় পাঁচ একর জায়গা জুড়ে ফাইয়ার কাটা হয়। যে স্থানে আগুন লেগেছে সেটি সুন্দরবনের লোকালয় সংলগ্ন উঁচু হয়ে যাওয়া বনভূমি। ওই স্থানটি নিয়মিত জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। ফলে সেখানে কয়েক ইঞ্চি পুরো মরা পাতা এবং ডালপালার আস্তর জমে রয়েছে। আগুন গাছের ওপরে বা ডালপালায় বিস্তৃতি হয়নি। শুধুমাত্র মাটির ওপর বিক্ষিপ্তভাবে আগুন বিস্তৃতি হয়।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলাধীন আমুরবুনিয়া ক্যাম্পের লথিফের ছিলা এলাকায় শনিবার বিকেল ৩টার দিকে বন বিভাগের সদস্যরা আগুন দেখতে পায়। এরপর থেকে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। আগুন যাতে ছড়াতে না পারে এজন্য আগুনের ওই স্থানের চারদিক থেকে প্রায় পাঁচ একর জায়গা জুড়ে ফাইয়ার লাইন কাটা হয়েছে। রবিবার সকাল থেকে আগুন নিভাতে নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, ফায়ার ব্রিগেড, কোস্টগার্ড, বন বিভাগ, স্থানীয় কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপ, ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম ও স্থানীয় গ্রামবাসী অংশ নেয়। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগুন নেভাতে সহায়তা করা হয়। আর আগুন নিভাতে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে পানি ছিটানো হয় সুন্দরবনে।