English

23 C
Dhaka
রবিবার, নভেম্বর ১৭, ২০২৪
- Advertisement -

কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার রোডম্যাপ বাস্তবায়নে গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে হবে

- Advertisements -

প্রান্তিক মানুষের জন্য কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অন্তভুর্ক্তি ও বাস্তবায়নের রূপকল্পের কথা গণমাধ্যমে তুলে ধরার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন ঢাকার প্রান্তিক মানুষের প্রতিনিধিরা। আজ ১০জুন ২০২৪ সোমবার, সকাল ১১ টায় মোহাম্মদপুর হুমায়ুন রোডের ডিনেট সম্মেলন কক্ষে ঢাকা কলিং প্রকল্পের উদ্যোগে সাংবাদিক পুলের সাথে এক মিটিং সাংবাদিক নিখিল ভদ্রের সভাপতিত্বে ও মাহবুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলন (পরিজা)’র সভাপতি ও পরিবেশ অধিদপরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো: আবদুস সোবহান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাপা’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রসুল, কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধি নাইরা নিজাম প্রমূখ। সভায় ঢাকা কলিং সম্পর্কিত একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন বারসিকের প্রজেক্ট ম্যানেজার ফেরদৌস আহমেদ। সভায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ সাংবাদিক, প্রান্তিক মানুষের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএসকের মনিটরিং ও ডকুমেন্টেশন ম্যানেজার জেসমিন মলি, সাংবাদিক নেতা রফিকুল ইসলাম আজাদ, শাকিলা রুমা, জাহিদুল ইসলাম প্রমূখ।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও বিশিষ্ট পরিবেশবিদ প্রকৌশলী মো: আবদুস সোবহান বলেন, বাংলাদেশের আইনের কোন অভাব নেই, অভাব হলো তার যথাযথ বাস্তবায়নের । কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমাদের সার্বিক পরিবেশের জন্য। আমাদের দেশে যে পরিমাণ বর্জ্য প্রতিদিন উৎপাদন হয় তার সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকার জন্য আমরা হাজারো পরিবেশগত সমস্যার মধ্যে পড়ছি। সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের উচিত সকল মন্ত্রনালয়কে নিয়ে একটি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং প্রত্যেকের কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।

তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যম সকল কিছুকে জাতির সামনে তুলে ধরার প্রধান বাহন। তাই গণমাধ্যম কর্মিদের আরও উৎসাহিত করার লক্ষ্যে মিডিয়া এওয়ার্ড ও ফেলোশীপের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
বিশেষ অতিথি বাপা’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রসূল বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বড় সমস্যা ইজারা প্রথা। বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করার জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি আর এর জন্য চাই একটি রোডম্যাপ। যে রোডম্যাপে প্রান্তিক মানুষের অংশগ্রহণ ও অধিকার নিশ্চিত হবে।

বস্তিবাসী অধিকার সুরক্ষা কমিটির সভাপ্রধান হোসনে আরা বেগম রাফেজা বলেন, যেকোন রোগ হলে তার জন্য সেই রোগের ঔষধ দিতে হবে, আমাদের শহরের ময়লা/বর্জ্যকে ব্যবস্থাপনার জন্য তেমনই রোডম্যাপ দরকার। আর মিটিং, সমাবেশ ও সাংবাদিকদের বড় ভূমিকা নিতে হবে। সাংবাদিকদের জন্য আমাদের প্রান্তিক মানুষের অনেক কথাই জাতির সামনে উঠে এসেছে।

সভায় বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ, নগরায়নের দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে একটি হওয়ায়, প্রতিনিয়ত ক্রমবর্ধমান বর্জ্য উৎপাদন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে আসছে। গত তিন দশকে, বর্জ্যের পরিমাণ চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে ২০২৫ সাল নাগাদ এর পরিমাণ বেড়ে প্রতিদিন ৪৭০০০ টন হওয়ার ধারণা করা হয় । গড়ে, নগরীর মোট উৎপাদিত বর্জ্যের ৫৫% অসংগৃহীত থেকে যায় এবং নগরীর সব ময়লার ভাগাড় উপচে থাকার পাশাপাশি এর ব্যবস্থাপনাও টেকসই নয়, যার ফলে জনস্বাস্থ্য যেমন ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে তেমনি পরিবেশও দূষিত হচ্ছে। তাছাড়া, উৎসে ময়লার পৃথকীকরণ ও পুনর্ব্যবহার অনেকাংশে অনুপস্থিত, এবং প্লাস্টিক এর ব্যবহার একাই পরিবেশের মারাত্নক ক্ষতির জন্য দায়ী। বিশেষ করে একক—ব্যবহারের প্লাস্টিকের (এসইউপি) বৃদ্ধির পরিমাণ পরিবেশের উপর, বিশেষ করে দেশের বিস্তৃত নদী ব্যবস্থার উপর গভীর প্রভাব ফেলে। এই প্লাস্টিকের ব্যবহার সংবেদনশীল জলজ বাসস্থানকে ব্যাহত করছে, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করে এবং সূক্ষ্মভাবে সমগ্র খাদ্য চক্রে প্রবেশ করছে, মানব স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে, বাস্তুতন্ত্রকে ব্যাহত করছে এবং বন্যপ্রাণীর ক্ষতি করছে।
রূপকল্পের মূল সুপারিশঃ
১। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সকল নীতিমালার পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সকল অঙ্গীকারসমূহের যথাযথ বাস্তবায়ন।
২। সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের উৎপাদন ও ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা এবং প্লাস্টিকের কাঁচামাল আমদানীতে কার্যকর বিধিনিষেধ আরোপ করা।
৩। ৩—আর কর্মসূচী (Reduce, Reuse, and Recycle) বাস্তবায়ন করা।
৪। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল নজরদারী ও পরিবীক্ষণ ব্যবস্থার প্রবর্তন করা।

এই প্রেক্ষাপটে, ইউএসএআইডি—এর আর্থিক সহায়তায় এবং কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের কারিগরি সহযোগিতায়, প্রোমোটিং অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড রাইটস (পার) কর্মসূচী’র অধীনে, টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণে, দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) কনসোর্টিয়ামের (ডিএসকে, বারসিক, কাপ, এবং ইনসাইটস) “ঢাকা কলিং” প্রকল্প বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরাপদ, অভিঘাতসহনশীল, ও টেকসই শহর এবং বসতি গড়ে তোলার জন্য, নগরের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে তাদের অধিকার আদায়ের লক্ষে সহায়তা করেছে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন