ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ইলেকট্রনিক্স বর্জ্য (ই-বর্জ্য) পরিবেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ই-বর্জ্যের ক্রমবর্ধমান হুমকি থেকে মূল্যবান সম্পদ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা করতে হবে। ই-বর্জ্য নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতার অনেক অভাব। এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। ই-বর্জ্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় সরকারের পাশাপাশি ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
মন্ত্রী আজ ঢাকার বসুন্ধরায় ওয়াল্টন করপোরেট অফিস মিলনায়তনে ওয়াল্টন আয়োজিত ‘ওয়াল্টন ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ অফার সেশন-৩ ডিক্লারেশন প্রোগ্রাম’ এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ওয়াল্টন ডিজিটেক ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান এস এম রেজাউল আলম শামিম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ওয়াল্টন প্লাজার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম মাহবুবুল আলম, ওয়াল্টনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজর জেনারেল ( অব:) ইবনে ফজল শায়খুজ্জামান, ডিএমডি ইভা রেজুয়ানা এবং অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী লিয়াকত আলী বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী স্মাগলিং অথবা মেয়াদোর্ত্তীর্ণ ডিজিটাল ডিভাইস বা যে কোন ধরণের পণ্যের অবৈধ প্রবেশ ঠেকানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, আমরা অন্য দেশের ইলেকট্রনিক পণ্যের ডাম্পিং স্টেশন হতে পারি না। মন্ত্রী বলেন, ই-বর্জ্য ব্যস্থাপনা একটি কঠিন কাজ। সফলভাবে ই –বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা করতে পারলে সমস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য তা হবে অত্যন্ত কল্যাণকর। ডিজিটাল প্রযুক্তি দুনিয়ায় ৩৭ বছরের দীর্ঘ পথপরিক্রমায় তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তিতে ৩২৪ বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বে গত সাড়ে চৌদ্দ বছরে বাংলাদেশ পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্বে যোগ্যতা অর্জন করেছে। মন্ত্রী উদ্ভাবনের জন্য গবেষণায় যথাযথ বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, গবেষণায় বিপুল বিনিয়োগের ধারাবাহিকতায় চীনের একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গোটা ইউরোপ ও আমেরিকাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশনের সাথে তার ২০১৯ সালে জেনেভায় এক বৈঠকের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে বলেন, সে বছর আমেরিকা ও ইউরোপ ৩ হাজারটি উদ্ভাবনের প্যাটেন্ট রেজিষ্ট্রেশনের জন্য আবেদন করে। অন্যদিকে চীনের একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান একাই ৫হাজারটি উদ্ভাবনের প্যাটেন্ট নিবন্ধনের জন্য আবেদন পেশ করে। মন্ত্রী উদ্বাবনের জন্য গবেষণার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ওয়াল্টন বিশ্বের অনেক দেশে তাদের ডিজিটাল ডিভাইস রপ্তানি করছে। তিনি বলেন ‘ওয়াল্টন ডানা ঝাপটাচ্ছে।’ একটু সহযোগিতা পেলে একদিন তারা আকাশে উড়বেই। কোরিয়া, চীন, জাপানের ব্র্যান্ডিং প্রতিষ্ঠান আছে। বাংলাদেশের ব্র্যান্ড হিসেবে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওয়াল্টন বিশ্বে পরিচিতি অর্জন করবে বলে মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় ই –বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ওয়াল্টনের উদ্যোগকে অত্যন্ত প্রশংসনীয় কাজ উল্লেখ করে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, ওয়াল্টনের মত দেশের সকল ডিজিটাল ইন্ডাস্ট্রিজসমূহকে এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় ওয়াল্টন চেয়ারম্যান মেয়াদোর্ত্তীর্ণ, পুরাতন ডিভাইস কিংবা ডিজিটাল পন্য আমদানি বন্ধের মাধ্যমে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, নব্বই দশকে আপনার লেখা বই পড়ে ডিজিটাল প্রযুক্তি জগতে আমার মতো অনেকেরই হাতে খড়ি। ডিজিটাল প্রযুক্তির কিংবদন্তী হিসেবে আপনি আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, ই-বর্জ্যের অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এদের রক্ষা করতে কার্যকর ও বাধ্যতামূলক পদক্ষেপ জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন।