বসন্তের আগমনে প্রকৃতি সেজেছে রঙিন সাজে। গাছে গাছে রঙিন ফুল আর কোকিলের কলতান। সবকিছুর মধ্যেও প্রকৃতিকে অন্য রকমভাবে সাজিয়েছে শিমুল ফুল। গ্রামের পথে-প্রান্তরে, মাঠঘাটে, পুকুরপাড়ে, মসজিদের ধারে, বিভিন্ন উদ্যানে, বাড়ির আঙিনাসহ বিভিন্ন জায়গায় ফুটছে রক্তিম আভা ছড়ানো শিমুল ফুল।
প্রকৃতির এমন অপরূপ সৌন্দর্য মনে করিয়ে দেয় সেই গানের লাইনটি ‘বসন্ত বাতাসে বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ আমার বাড়ি আসে, সই গো বসন্ত বাতাসে।’
বালিয়াকান্দি উপজেলায় বিভিন্ন এলাকার রাস্তার দুপাশে, পুকুরপাড়ে শিমুলগাছে ফুল বাতাসে দোলা খাওয়ার দৃশ্য দেখা যায়। যা পথচারীসহ দর্শনার্থীদের মন কাড়ছে। তাছাড়া গাছে গাছে আসতে শুরু করেছে নতুন পাতা। স্নিগ্ধ সবুজ কচি পাতার ধীর গতিময় বাতাস জানান দিচ্ছে নতুন লগ্নের।
জানা গেছে, শিমুলগাছের বৈজ্ঞানিক নাম বোমবাক্স সাইবা লিন। বীজ ও কাণ্ডের মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার হয়। প্রাকৃতিকভাবেই শিমুলগাছ বেড়ে ওঠে। শিমুলগাছ কেবল সৌন্দর্যই বাড়ায় না এই গাছে রয়েছে নানা উপকারিতা এবং অর্থনৈতিকভাবে ও বেশ গুরুত্ব বহন করছে।
প্রাকৃতিকভাবে তুলা আহরণের অন্যতম অবলম্বন হচ্ছে শিমুলগাছ। এ গাছের সব অংশেরই রয়েছে ভেষজ গুণ। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা এখনো নানা রোগের চিকিৎসায় এ গাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে। তবে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে এ গাছটি। আজ থেকে এক দশক আগেও গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় শিমুলগাছ দেখা গেলেও এখন আর যেখানে-সেখানে চোখে পড়ে না।
বালিয়াকান্দির পাইককান্দির বাসিন্দা আকিদুজ্জামান বলেন, শিমুল ফুলের সৌন্দর্য সত্যিই মুগ্ধ করবে যে কাউকে। শিমুলগাছের পাশ দিয়ে গেলে মনটা একদম জুড়িয়ে যায়। এই সৌন্দর্য বর্ণনা করা কঠিন। আমাদের সকলের উচিত এই শিমুলগাছ না কেটে এটাকে সংরক্ষণ করা। বারুগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সংগঠক আমীর আলী মুন্সী বলেন, ‘আগে প্রায় সব জায়গায়ই শিমুলগাছ দেখা যেত।
প্রকৃতির এই অপরূপ চিত্র এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। আমাদের পরিবেশকে আমরা নিজেরাই ধ্বংস করে দিচ্ছি। আমাদের পরিবেশ রক্ষার্থে হলেও শিমুলগাছ কাটা থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে।’ এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রাকৃতিকভাবে তুলা আহরণের অন্যতম অবলম্বন হচ্ছে শিমুলগাছ। এ গাছের সব অংশেরই রয়েছে ভেষজ গুণ। শিমুলের ইংরেজি নাম সিল্ক কটন ট্রি। এই গাছকে টিকিয়ে রাখতে হবে। বসন্তের স্মারক শিমুলগাছ রোপণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।