মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। ৮ জুলাই শনিবার সকালে এ উপজেলার স্থানীয় ও কর্মরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক/বর্তমান শিক্ষার্থীর উদ্দেশে ফেসবুকে পোস্ট দেন তিনি।
তার পোস্টে সাড়া দেন শেরপুর সরকারি কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক সাবেক ঢাবি শিক্ষার্থী মো. আনিছুর রহমান, শেরপুর শহিদিয়া আলীয়া কামিল মাদ্রাসার ইংরেজি প্রভাষক সাবেক ঢাবি শিক্ষার্থী আজাদুল ইসলাম আজাদ, উলিপুর আমেরিয়া সমতুল্যা মহিলা ফাযিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক সাবেক ঢাবি শিক্ষার্থী দেশ রূপান্তর পত্রিকার শেরপুর (বগুড়া) সংবাদদাতা জাহিদ হাসান, একই মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক সাবেক ঢাবি শিক্ষার্থী সাখাওয়াত হোসাইন।
৮ জুলাই শনিবার দুপুরে এ উপজেলার ২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উলিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উলিপুর আমেরিয়া সমতুল্যা মহিলা ফাযিল মাদ্রাসায় ফলদ, বনজ, ঔষধি ও সৌন্দর্যবর্ধক বৃক্ষগুলো রোপণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উলিপুর আমেরিয়া সমতুল্যা মহিলা ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল হাই, উলিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমতাজ জাহানসহ সাবেক ঢাবি শিক্ষার্থীরা।
বৃক্ষরোপণের এমন নেশা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৃক্ষের প্রতি টান আমার রক্তে গেঁথে গেছে। যেখানেই যাই চেষ্টা করি বৃক্ষ লাগাতে। আপনার এ কাজে সাধারণত কাদেরকে সহযোগী করেন এ ব্যাপরে তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি প্রান্তে আমার শিক্ষার্থী আছে এবং আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধুরা আছে। আমি এ বৃক্ষরোপণের কাজে তাদের যুক্ত করার চেষ্টা করি। একান্তই না পেলে ওই এলাকার যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যুক্ত করি।
গাছ লাগানোর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ঢাবির এ সহকারী অধ্যাপক আরো বলেন, একটি দেশের মোট ভূখণ্ডের কমপক্ষে ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা দরকার। বাংলাদেশের আছে মাত্র ১৭.৫ ভাগ। দিন দিন বনভূমি উজাড় হচ্ছে। গাছের সংখ্যা কমতে থাকায় আমরা আবহাওয়ার আচরণ বদল দেখতে পাচ্ছি। খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন ইদানীং গরমের সময় ঠাণ্ডা, ঠাণ্ডার সময় গরম পড়ছে।
পরিবেশ-প্রকৃতির এই বিরূপ আচরণ বদলাতে বৃক্ষ রোপণের বিকল্প নেই। স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গাছ লাগাতে উৎসাহিত করা যেতে পারে। চীনের চংকিং নামের একটি শহর আছে এখানকার শিক্ষার্থীদের বছরে একবার গ্রামে পাঠানো হয়। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে গ্রামে গিয়ে ১০০টি করে বৃক্ষরোপণ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা বাড়ছে। দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তনে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আর তাই প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায় তো বটেই, ব্যক্তি পর্যায়েও গাছ লাগাতে এগিয়ে আসতে হবে। এ গাছ আমাদের মা, মাটি, প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করে।