রুবেন, বিশ্বের নিঃসঙ্গ সিংহটিকে ধীরে ধীরে তার স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর চেষ্টা চলছে । আর্মেনিয়ান-আজারবাইজান সীমান্তের চিড়িয়াখানায় রুবেন ছিল শেষ প্রাণী, যে চিড়িয়াখানাটি রাশিয়ান অলিগার্চ মালিক মারা যাওয়ার পর বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
সিংহটিকে গত পাঁচ বছর ধরে একটি ছোট খাঁচায় বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছিল এবং এতদিন একা একা থাকতে সে প্রায় ভুলতেই বসেছিলো কীভাবে গর্জন করতে হয়, কেবল মাঝে মাঝে কান্নাকাটি করতো রুবেন । বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের জ্যান ক্রিমার জানাচ্ছেন যে, মালিক মারা যাওয়ার পরে চিড়িয়াখানার অন্যান্য সমস্ত প্রাণীদের সংরক্ষণ করা হয়েছিল।
দুঃখের বিষয়, রুবেনের জন্য কোন জায়গা ছিল না। সিংহ পরিবার থেকে দূরে থেকে একা হয়ে পড়েছিলো রুবেন। সে যে খাঁচায় থাকতো না তো সেখানে সূর্যের আলো পৌছাতো , না তো খোলা বাতাস ঢুকতো। রুবেনের বয়স প্রায় ১৫ বছর।
অবহেলার জেরে তার চুল, দাঁত ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে, দেখা দেয় স্নায়বিক সমস্যা । এখন যেহেতু চিড়িয়াখানাটি বন্ধ হয়ে গেছে, রুবেনকে উদ্ধার করায় প্রাক্তন মালিকের পরিবার বেশ খুশি ছিল কিন্তু তাকে সরিয়ে নেয়ার অপারেশনটি গোপন রাখতে হয়েছিল ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে । জ্যান বলেছেন: “রুবেনকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দক্ষিণ আফ্রিকায় নিয়ে যাওয়া অত্যাবশ্যক নয়তো তার সমস্যা আরো বাড়তে পারে।
রুবেনের মেরুদণ্ডের সমস্যার কারণে সে হাঁটতে হাঁটতে টলতে থাকে এবং মাঝে মাঝে পা ভাঁজ করে ফেলে। তার চোখে মিয়োসিস আছে ।
তার শ্রবণশক্তিও দুর্বল হয়ে পড়েছে। পশুচিকিৎসা বিশেষজ্ঞ পিটার ক্যাল্ডওয়েল রুবেনের সর্বশেষ রক্ত পরীক্ষা পর্যালোচনা করছেন এবং তাকে দক্ষিণ আফ্রিকায় স্থায়ীভাবে পাঠানোর বন্দোবস্ত করছেন। রুবেন মার্চ মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় তার আকাঙ্খিত যাত্রা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তাকে ইতিমধ্যেই মাইক্রোচিপ পরানো হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় টিকা দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার অভয়ারণ্যে, রুবেনের একটি আবাসস্থল থাকবে যাতে তার চলাচলের উন্নতির সাথে সাথে তাকে আরও বড় স্থানে চলাফেরা করার অ্যাক্সেস দেওয়া যায়।