চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর ইছানগরে এস আলম সুগার রিফাইনারিতে অগ্নিকাণ্ডের পর পোড়া চিনি গলে কর্ণফুলী নদী দূষণের ফলে হাজার হাজার মাছ মরে ভেসে উঠছে।
বুধবার (৬ মার্চ) থেকে কর্ণফুলী নদীর বিভিন্ন প্রান্তে মরা মাছ ভাসতে দেখা গেছে। এছাড়া নদীর পানির রঙ বদলে কালচে রূপ ধারণ করেছে। আগুন নিভে যাওয়ার পর অপরিশোধিত চিনি আগুনে পুড়ে গলে লাভার মতো বেরিয়ে আসছে। এরসঙ্গে মিশেছে আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ছিটানো রাসায়নিক উপাদান। দুইয়ে মিলে বিভিন্ন নালা-নর্দমা হয়ে কর্ণফুলী নদীতে এসে পড়ছে পোড়া চিনি। এদিকে পোড়া চিনিতে কর্ণফুলী দূষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন।
বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে। বিভিন্নস্থানে মাছ মরে ভেসে উঠছে। অনেক মাছ জীবত থাকলেও সেগুলো অতি দুর্বল থাকায় এগুলো সহজে ধরা যাচ্ছে। নদীর পাড়ে শতশত কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধ নদীতে নেমে এসব মৃত বা অর্ধজীবিত মাছ সংগ্রহ করছে।
নদীর তীরে মাছ সংগ্রহে ব্যস্ত আব্দুল আলী নামের এক তরুণ বলেন, এস আলমের পোড়া চিনি গলে নদীতে ভেসে আসায় এখানকার পানি কালচে হয়ে গেছে। এই পানিতে বিভিন্ন ধরনের মাছ কোনোটা মৃত আবার কোনোটা দুর্বল হয়ে ভেসে উঠছে। স্থানীয়রা ছোটবড় চিংড়ি, টেংরা, কাঁকড়াসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ মৃত অবস্থায় শিকার করছেন।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল ইছানগর এলাকার বাসিন্দা এবং ইছানগর-বাংলাবাজার ঘাট সাম্পান মালিক সমিতির সভাপতি লোকমান দয়াল বলেন, গত মঙ্গলবার থেকে এস আলম সুগার রিফাইনারি থেকে পোড়া চিনি গলে নদীতে আসছে। বিশেষ করে রাতে এস আলম সুগার মিলের দেওয়াল কেটে পোড়া লাভা মিশ্রিত পানি পাশের নালাতে ছেড়ে দিলে সেগুলো নালা হয়ে নদীতে এসে পড়ছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলা’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়ক মুনিরা পারভিন বলেন, পুড়ে যাওয়া অপরিশোধিত চিনি মিশ্রিত পানি নদীতে কী প্রভাব ফেলতে পারে; তা খালি চোখেই দেখা যাচ্ছে। মাছ মরে ভেসে উঠছে। অন্য জলজ প্রাণীদের কী অবস্থা তা বলাই বাহুল্য। নদীর বাস্তুসংস্থান রক্ষা করতে এখনই এই কেমিক্যাল বর্জ্য নদীতে ছাড়া বন্ধ করতে হবে।