শরৎ মানেই নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা এবং কাশফুলের শুভ্রতা। … এ ঋতুতে পালকের মতো নরম এবং ধবধবে সাদা রঙের কাশফুল ফোটে। বর্ষা ঋতুকে বিদায় জানিয়ে নীল আকাশে সাদা তুলোর মত মেঘের সাথে কাশফুলের মৃদু বাতাসে দোল খাওয়া প্রকৃতিতে শুধুই মুগ্ধতা ছড়ায়।
শরৎ ঋতুর কথা মনে এলেই আমাদের চোখের কোণে ভেসে উঠে ফুটন্ত সাদা কাশফুল, পাল তোলা নৌকার সারি, দূর আকাশের কোণে জমে থাকা দূসর সাদা মেঘের ভেলার কথা। কখনো মিষ্টি রোদে আলোর খেলা আবার কখনো হঠাৎ বৃষ্টির হানা। মাঝে সাজেই দেখা যায় রৌদ্র মেঘের লোকুচুরি খেলা। অনুভুতির মাত্রাটা একটু গভীরে নিলে মনে হয় যেন আকাশের সব নীলে একাকার হয়ে জলের স্বচ্ছ বহমান ধারা ছুটে চলছে মোহনার টানে। সেই অবিরত কল কল ধ্বনির এক টানা শব্দ বেজেই চলে পুরো শরৎ জুড়েই।
এমন চলতে চলতেই ফুরায় এক সময় বয়ে চলা স্বচ্ছ জলের ধারা। তার দুপারে বেড়ে উঠা কাশ গুচ্ছ গুলোও ততদিনে যৌবনে পা রাখে। ঝিরি ঝিরি বাতাসে দুলতে থাকে তার সারা অঙ্গ। এমন অঙ্গের নাচন কার না ভাল লাগে। বিশেষ করে তরুণ মনের মানুষদের কাছে শরৎ সব থেকে সুন্দর ঋতু।
এই সুন্দরের, শুভ্রতার স্পর্শ কে না পেতে চায়? কিন্তু সুন্দরের সঙ্গে যদি ভয়ঙ্কর যুক্ত হয়ে যায়? হ্যাঁ সে সম্ভাবনাও রয়েছে। কাশফুল ফোঁটে নদীর ধারে, বালি মটিতে, জলাধারের পাশে। কাশফুলকে একটু ছুঁইয়ে দিতে অনেকেই হয়তো জলাধারের কাছে চলে যান। কিন্তু একবারও কি ভেবেছেন, সেই কাশবনে কোনো আঘটন ঘটতে পারে কি না? আতঙ্ক নয়, সম্প্রতি দেশে রাসেল ভাইপার নামে ভয়ঙ্কর প্রজাতির সাপ ছড়িয়ে পড়েছে।
পদ্মা নদীরতীরবর্তী কয়েকটি জেলা ও চরাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে ভয়ংকর ‘রাসেলস ভাইপার’ সাপ। গত আগস্টে এ সাপের কামড়ে দুজনের মৃত্যু এবং ৯ জন অসুস্থ হয়েছেন। এতে ওইসব এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সাপের আস্তানা গুঁড়িয়ে দিতে ফরিদপুরে ৭০ বিঘা কাশবন পরিষ্কার করা হয়েছে। অর্থাৎ পদ্মাতীরবর্তী কাশবন যে ভয়ঙ্কর সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশে রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে বাঘা পর্যন্ত পদ্মাপারে সাপটি এখন বেশি দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া পাবনার রূপপুর, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা, ফরিদপুরের চরভদ্রাসন, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং ও মাদারীপুরের শিবচরে এ সাপ দেখা গেছে।
এছাড়াও কাশবন তীরবর্তী জলাধারে নানা ধরনের সাপ দেখা যায়। ফেসবুকে সাইফুর রহমান সুমন নামে একজনকে দুটি ছবি শেয়ার করতে দেখা যায়, যেখানে কাশবন সংলগ্ন জলাধারে ফনা তুলে ভয়ঙ্কর দর্শন একটি সাপকে দেখা যায়। ছবিটি ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।
তাই শুধু পদ্মা নয়, জলাধারের পাশের কাশবনে যাওয়ার পূর্বে সতর্ক হতে হবে- বলছেন নেটিজেনরা ।