পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেছেন, শব্দদূষণ থেকে মুক্ত থাকতে আমাদের প্রত্যেককে শব্দসচেতন হতে হবে। অপ্রয়োজনীয় শব্দ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এলক্ষ্যে শিশুদেরকে শৈশব থেকেই শব্দসচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। সকলে মিলেই নিরাপদ আবাস গড়ে তোলার মাধ্যমে আমরা গড়ে তুলব ‘শব্দদূষণমুক্ত পরিবেশ, শেষ হাসিনার বাংলাদেশ’ ।
বুধবার (২৮ এপ্রিল) “Protect Your Hearing. Protect Your Health” প্রতিপাদ্য ধারণ করে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস-২০২১ উদযাপন উপলক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের “শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প” আয়োজিত ভার্চুয়াল কর্মশালায় ঢাকাস্থ সরকারি বাসভবন হতে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের রুটিন দায়িত্বে নিয়োজিত মহাপরিচালক মোঃ মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, সচিব জিয়াউল হাসান এনডিসি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপচার্য প্রফেসর প্রাণ গোপাল দত্ত এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোঃ হুমায়ুন কবীর (যুগ্ম সচিব)। এছাড়াও কর্মশালায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, পুলিশ বিভাগ, পরিবহণ সেক্টর, সিটি কর্পোরেশন, বেসরকারী সংস্থা, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, গবেষক এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সরকার শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আন্তরিকভাবে কাজ করছে। সচিবালয়ের চারপাশে নীরব এলাকা বাস্তবায়ন করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশেন এর সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তাবায়ন করা হবে। বর্তমানে আগারগাঁও এলাকাসহ সকল (৯টি) সিটি কর্পোরেশনে “নীরব এলাকা” ঘোষণা করা হয়েছে যেখানে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনিক এলাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সকল নীরব এলাকা শব্দমুক্ত করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পুলিশ, সিটি কর্পোরেশন, বিআরটিএসহ বিভিন্ন সংস্থা একসাথে কাজ করবে। প্রয়োজনে বিদ্যমান আইন পরিবর্তন করে নতুন আইন প্রবর্তন এবং কঠোরভাবে বিদ্যমান আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহর সহনীয় মাত্রার চেয়ে তিনগুন তীব্রতার শব্দদূষণে আক্রান্ত। এর ফলে প্রায় অর্ধ কোটি মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতিনিয়ত অসচেতনতাবশত, অকারণেই ঘরে এবং ঘরের বাইরে শব্দদূষণ করা হচ্ছে। আবাসিক এলাকায় যানবাহনে অযাচিত হর্ণের ব্যবহার, নির্মাণ কাজে সৃষ্ট শব্দ, বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মাইক/সাউন্ড বক্সের মাধ্যমে সৃষ্ট শব্দ দ্বারা প্রতিনিয়ত শব্দদূষণ হচ্ছে যা মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যহত করছে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, উচ্চ শব্দ কম সময়ের জন্য হলেও তা শ্রবণ শক্তির জন্য ক্ষতিকর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ১.১ বিলিয়ন মানুষ (১২-৩৫ বছর বয়সী) অত্যধিক শব্দযুক্ত বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকার কারণে শ্রবণশক্তি হ্রাস হওয়ার ঝুঁকিতে রযেছে। মানসম্মত জীবন যাপনের লক্ষ্যে শব্দদূষণের বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে নিজে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি অন্যকেও সচেতন করতে সবাইকে আন্তরিক হওয়ার আহবান জানাই।