অভিনেত্রী শাহ হুমায়রা হোসেন সুবাহকে নির্যাতনের অভিযোগে করা যৌতুকের মামলায় গায়ক ইলিয়াস হোসাইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠনের ফলে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে।
আজ রবিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক আবেরা সুলতানা খানম আসামির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন। ট্রাইবব্যুনালের পেশকার ইসতিয়ার আলম জনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ২৯ মে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক আবেরা সুলতানা খানম এই মামলার চার্জশিট গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে মামলার চার্জ গঠনের জন্য এদিন ধার্য করেন আদালত।
এরআগে চলতি বছরের মার্চ মাসে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের উপ-পরিদর্শক মাসুমা আফ্রাদ ইলিয়াসকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় ১১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
এ মামলায় উচ্চ আদালতের ছয় সপ্তাহের জামিনে ছিলেন ইলিয়াস। আত্মসমর্পণ করে জামিন শুনানির দিন আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় গত ২২ মার্চ ইলিয়াসের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক জুলফিকার হায়াত।
গত ৩ জানুয়ারি যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগে বনানী থানায় এ মামলা করেন সুবাহ। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত বছরের সেপ্টেম্বরে সুবাহর সঙ্গে ইলিয়াসের পরিচয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তাদের গত বছরের ১ ডিসেম্বর বিয়ে হয়। বিয়েতে সুবাহর পরিবার ইলিয়াসের চাহিদা অনুযায়ী ১২ লাখ টাকা দামের রোলেক্স ব্র্যান্ডের ঘড়িসহ ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকার যৌতুক দেয়। এতেও সন্তুষ্ট না হয়ে আবারও যৌতুক দাবি করেন ইলিয়াস। এরই মধ্যে সুবাহ জানতে পারেন, ইলিয়াস আগেও একাধিক বিয়ে করেছেন। এছাড়া একাধিক নারীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে।
সুবাহর কাছে ফ্ল্যাট কেনা বাবদ ৫০ লাখ এবং গাড়ির জন্য আরও ৩০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন ইলিয়াস। গত ৯ ডিসেম্বর ইউটিউব চ্যানেল কেনার জন্য সুবাহর মায়ের কাছে আরও ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করলে তাকে আড়াই লাখ টাকা দেওয়া হয়। গত ২৭ ডিসেম্বর দুপুরে ফ্ল্যাট ও গাড়ি কেনার জন্য ৮০ লাখ টাকা দেয়ার জন্য সুবাহকে চাপ দেন ইলিয়াস। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এরই জেরে ওইদিন রাত ৮টার দিকে সুবাহকে শারীরিক নির্যাতন করেন ইলিয়াস। পরদিন আবারও ৮০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন।
টাকা দিতে অপারগতা জানালে সুবাহকে আবারও শারীরিক নির্যাতন করেন ইলিয়াস। এতে জখম হন সুবাহ। এরপর সুবাহকে ব্যথার ওষুধের নামে অন্য ওষুধ খাইয়ে দেন ইলিয়াস। এর কিছুক্ষণ পরই অজ্ঞান হয়ে পড়েন তিনি। এ সুযোগে ইলিয়াস আলমারিতে থাকা ২০ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার এবং ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যান।