এ কে আজাদ: সাইফুল আজম কাশেম। চলচ্চিত্র পরিচালক-প্রযোজক ও পরিবেশক। চলচ্চিত্রে এসেছিলেন নায়ক হতে । দেখতে বেশ সুদর্শনও ছিলেন সাইফুল আজম কাশেম। কিন্তু নিজে নায়ক না হয়ে, হয়ে গেলেন নায়ক বানাবার কারিগর। হয়ে গেলেন চলচ্চিত্র পরিচালক-প্রযোজক। একের পর এক নির্মাণ করে গেছেন জনপ্রিয় সব সামাজিক কাহিনীর চলচ্চিত্র।
বাণিজ্যসফল চলচ্চিত্র গুণী নির্মাতা হিসেবে এক সময় বেশ খ্যাতি ছিল তাঁর। তাঁর নির্মিত প্রায় সব চলচ্চিত্রই হয়েছে দর্শকপ্রিয় ও ব্যবসা সফল । এই সামাজিক ছবি’র সফল নির্মাতা সাইফুল আজম কাশেম-এর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১৯ সালের ১১ মার্চ, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। প্রয়াত এই গুণি চলচ্চিত্র পরিচালক এর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই । তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
সাইফুল আজম কাশেম ১৯৪৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর, কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। এহতেশাম-মুস্তাফিজ ভ্রাত্বদ্বয়ের সহকারী হিসেবে তাঁর চলচ্চিত্রে আগমন। তিনি একাধারে চলচ্চিত্র পরিচালক-প্রযোজক ও পরিবেশক ছিলেন। তাঁর প্রযোজনা-পরিবেশনা প্রতিষ্ঠানের নাম ‘মেট্রো ফিল্মস্’।
সাইফুল আজম কাশেম পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘অন্তরালে’ মুক্তি পায় ১৯৭৪ সালে। তাঁর নির্মিত অন্যান্য ছবির মধ্যে আরো রয়েছে- সোহাগ, ঘর সংসার, বৌরাণী, সানাই, ধনদৌলত, দুনিয়াদারী, হালচাল, অবহেলা, ভরসা, সাক্ষাত, গৃহবধূ, স্বামীর আদেশ, ত্যাজ্যপুত্র, ইত্যাদি।
‘এ আকাশকে সাক্ষী রেখে এ বাতাসকে সাক্ষী রেখে’, ‘দাও গায়ে হলুদ পায়ে আলতা হাতে মেহেদী’, ‘ও দুটি হাত চিরদিন থাক হয়ে মোর গয়না’, ‘তুমি আছো বলে আমি সোহাগিনী দুটি পায়ে দিয়ে ঠাই করেছো ঋণি’, ‘বলনা একবার এই রাত তোমার আমার’… এমনসব জনপ্রিয় কালজয়ী গান থাকতো, সাইফুল আজম কাশেম পরিচালিত চলচ্চিত্রে ।
জনপ্রিয় সামাজিক ছবি’র বাণিজ্যসফল নির্মাতা হিসেবে তিনি এক সময় বেশ আলোচিত ছিলেন। তাঁর প্রায় সব চলচ্চিত্রই দর্শকপ্রিয়, ব্যবসা সফল ও আলোচিত হয়েছে। সুপারহিট ছবি’র পরিচালক হিসেবে তাঁর নাম-ডাকও ছিল বেশ। শুনেছি তিনি না-কি, নায়ক হতে এসেছিলেন চলচ্চিত্রে। দেখতে বেশ সুদর্শনও ছিলেন । নায়ক হয়তো হতেও পারতেন। কিন্তু তিনি নায়ক না হলেও, অনেক নায়ক-নায়িকাদের ক্যারিয়ার গড়ে দিয়েছেন, চলচ্চিত্র পরিচালক হয়ে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পের সমৃদ্ধিতে রেখেছেন অনন্য অবদান।
আমাদের চলচ্চিত্রের মানুষদের কাছে, বিনয়ী-ভদ্র-অমায়িক ব্যক্তি হিসেবে সাইফুল আজম কাশেম ছিলেন সমাদৃত। তিনি তাঁর মূল্যবান সৃষ্টিকর্মের মধ্যদিয়ে বেঁচে থাকবেন যুগের পরে যুগ।