আজাদ আবুল কাশেম: সামাজিক ছবির জননন্দিত নির্মাতা কামাল আহমেদ-এর ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ । তিনি ১৯৯৮ সালের ৪ আগস্ট, ইন্তেকাল করেন । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। প্রয়াত এই গুণি চিত্রপরিচালক-এর স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
কামাল আহমেদ ১৯৩৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি, কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পঞ্চাশের দশকে ঢাকায় মঞ্চনাটকে অভিনয় করতেন তিনি। পরে মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘তোমার আমার’ ছবির সহকারী পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্রে আসেন। পরিচালক এহতেশাম-এর সহকারী হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।
কামাল আহমেদ পরিচালিত প্রথম ছবি ‘উজালা’ মুক্তিপায় ১৯৬৬ সালে। তাঁর পরিচালিত অন্যান্য চলচ্চিত্রসমূহ-
পরওয়ানা, রূপকুমারী, অবাঞ্চিত, অধিকার, অশ্রু দিয়ে লেখা, অনির্বাণ, উপহার, অঙ্গার, অনুরাগ, ভাঙ্গা গড়া, রজনীগন্ধা, লালু ভুলু, দাতা হাতেমতাই, পুত্রবধূ, আওয়ারা, মা ও ছেলে, ব্যথার দান, অগ্নিকন্যা, প্রায়শ্চিত্ত, গৃহলক্ষ্মী, প্রতিশ্রুতি, গরীবের বউ, অবুঝ সন্তান, রাজাবাবু, বিসর্জন, ইত্যাদি।
কামাল আহমেদ চলচ্চিত্র পরিচালক হওয়ার আগে ছিলেন একজন দক্ষ মঞ্চ অভিনেতা। তিনি কয়েকটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনীত ছবি- ১৩ নং ফেকুওস্তাগার লেন, স্মৃতিটুকু থাক, শনিবারের চিঠি, রাতের পর দিন, অন্তরঙ্গ, রংবাজ, চোখের জলে, প্রভৃতি।
গুণী এই চলচ্চিত্র নির্মাতা তাঁর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
১৯৮৩ সালে ‘লালু ভুলু’ ছবির জন্য ও ১৯৯০ সালে ‘গরীবের বউ’ ছবির জন্য, শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী হন কামাল আহমেদ ।
সৃজনশীল-প্রতিভাবান এই চলচ্চিত্র নির্মাতা, পারিবারিক ও সামাজিক গল্পের বাণিজ্যসফল ছবি’র গুণি নির্মাতা হিসেবে খ্যাতি পেয়েছিলেন। তাঁর নির্মিত প্রতিটি চলচ্চিত্রই আলোচিত, প্রসংশিত ও জননন্দিত হয়েছে। তারকাবহুল চলচ্চিত্র নির্মাণের মাস্টার মেকার ছিলেন তিনি। চলচ্চিত্র নির্মাণের এই অসাধারণ কারিগর, হিট-সুপারহিট সব চলচ্চিত্র নির্মাণ করে, জননন্দিত চিত্রপরিচালক হিসেবে নিজেকে নিয়ে গেছেন, অনন্য এক উচ্চতায়।
বাংলা চলচ্চিত্রের অবিস্মরণীয় মেধাবী নির্মাতা কামাল আহমেদ, চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে।