English

23 C
Dhaka
বুধবার, জানুয়ারি ১৫, ২০২৫
- Advertisement -

ভাষাসৈনিক ও প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ আবদুল লতিফ-এর ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- Advertisements -

এ কে আজাদ: আবদুল লতিফ। প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ ও ভাষাসৈনিক। বাংলাদেশের সঙ্গীতের বহুমাত্রিক প্রতিভা আবদুল লতিফ, বিভিন্ন ধরণের গান লিখেছেন, সুর দিয়েছেন ও গেয়েছেন। পল্লীগীতি, দেশাত্মবোধক গান, গণসংগীত, জারি, পুঁথি, আধ্যাত্মিক তাঁর করা সব ধরণের গানই ছিল অত্যন্ত উচুমানের। ভাষাসৈনিক ও প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ আবদুল লতিফ-এর ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০০৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। প্রয়াত এই সঙ্গীতজ্ঞ’র প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

খ্যাতনামা গীতিকার ও সুরকার আবদুল লতিফ ১৯২৭ সালে, বরিশাল জেলার রায়পাশা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আমিনুদ্দিন, মায়ের নাম আজিমুন্নেসা। স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেনীতে পড়াঅস্থায় তিনি প্রথম স্কুলের এক অনুষ্ঠানে গান করে সবার নজর কাড়েন। সঙ্গীতের প্রতি প্রবল আগ্রহের কারণে, কৈশোরেই চলে যান কলকাতায়। সেখানে ওস্তাদদের কাছে তালিম নেন সংগীতে। শেখেন নানা ধরনের লোকগান । কংগ্রেস সাহিত্য সংঘে তিনি ১৬ বছর বয়স থেকে গান গাইতে শুরু করেন।

১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকায় চলে আসেন এবং তৎকালীন রেডিও পাকিস্তানের ঢাকা কেন্দ্রের নিয়মিত কন্ঠশিল্পী হিসেবে যোগ দেন। তিনি বিভিন্ন মঞ্চ অনুষ্ঠানে গান গাইতেন এবং ভাষা আন্দোলনে অণুপ্রেরণা যোগাতেন। ১৯৫২-তে আব্দুল গাফফার চৌধুরীর লেখা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ গানটিতে আবদুল লতিফই প্রথম সুরারোপ করেন। পরবর্তীকালে গানটিতে সুর করেছিলেন আলতাফ মাহমুদ। বর্তমানে আলতাফ মাহমুদের সুরটিই টিকে আছে।

আবদুল লতিফ তাঁর জীবনে অসংখ্য গানে সুরারোপ করেছেন এবং কন্ঠ দিয়েছেন। তাঁর জনপ্রিয় কালজয়ী গানের মধ্যে রয়েছে- ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়/ ওরা কথায় কথায় শিকল পরায় আমার হাতে পায়…, দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা/ কারো দানে পাওয়া নয়…., সোনা সোনা সোনা, লোকে বলে সোনা সোনা নয় তত খাঁটি.., তোরা ঢাকা শহর রক্তে ভাসাইলি…, হেই সামালো ধান হো…., ভুলব না ভুলব না…, বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা.. ইত্যাদি।

সংগীতের কালজয়ী প্রতিভা আবদুল লতিফ চলচ্চিত্রেও গান লিখেছেন, গেয়েছেন, সুর করেছেন এবং সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। তিনি যেসব ছবিতে কাজ করেছন- শেষ পর্যন্ত, নয়ন মনি, কুঁচ বরণ কন্যা প্রভৃতি।

আবদুল লতিফ-এর লেখা কয়েকটি বইও প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে- দুয়ারে আইসাছে পালকী, ভাষার গান দেশের গান অন্যতম।

গণমানুষের ভালোবাসা-শ্রদ্ধা পাওয়া আবদুল লতিফ, তাঁর জীবদ্দশায়ই অনেক সম্মান-সম্মাননা ও রাস্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে- একুশে পদক-১৯৭৯, স্বাধীনতা পদক-২০০২। আরো পেয়েছেন কুমিল্লা থিয়েটার পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী পদক, মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা, জাতীয় জাদুঘর পদক, নজরুল একাডেমী সম্মাননা, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট পদক, রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থা পদক, বাংলা একাডেমী পদক, শেরেবাংলা পদক, ভাষাসৈনিক সম্মাননা ইত্যাদি।

আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বহু অভিধায় অবিহিত, সঙ্গীতে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন আবদুল লতিফ। ভাষাসৈনিক-দেশবরেণ্য সঙ্গীতজ্ঞ আবদুল লতিফ, চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন আমাদের মাঝে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন