নাসিম রুমি: ঢালিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির নতুন বছর শুরু হয়েছে হতাশার গল্প দিয়ে। গত বছরের শেষ কয়েক মাসে মুক্তি পাওয়া প্রায় সবগুলো সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে দর্শক টানতে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান ঢাকাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির গল্প পুরোটাই বিষাদে ভরা। এর থেকে উত্তরণের জন্য নেই দৃশ্যমান তেমন কোনো পদক্ষেপ।
এদিকে একের পর এক মানহীন সিনেমা মুক্তি দিয়েও এ শিল্প ধ্বংসের পায়তারা করা হচ্ছে। যার ফলে পাল্লা দিয়ে কমছে প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা। তবুও বেশ কিছু প্রেক্ষাগৃহ মালিক এখনও আশা নিয়ে আছেন। চালু রেখেছেন প্রেক্ষাগৃহ। মানহীন কাজের ভিড়ে কিছু ভালো গল্প ও নির্মাণের সিনেমা আসলেও সেগুলো ঠিকঠাক দর্শকের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।
এদিকে গত বছরের হতাশার গল্প ভুলে, নতুন বছরে নতুন করে সিনেমা নিয়ে স্বপ্ন দেখেছেন অনেকে। কিন্তু বছরের শুরুতে হতাশ হতে হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। জানুয়ারি মাসে মুক্তি পায় চারটি সিনেমা। এর মধ্যে ৩ জানুয়ারি মুক্তি পায় ‘মধ্যবিত্ত’, ১০ জানুয়ারি ‘মেকাপ’, ১৭ জানুয়ারি ‘কিশোর গ্যাং’, ২৪ জানুয়ারি ‘রিকশা গার্ল’। এগুলোর একটিও সেভাবে দর্শক টানতে পারেনি। প্রত্যাশা পুরণ করতে পারেনি প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের। ব্যাবসায়িকভাবে ব্যর্থতার স্বাদ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে সিনেমা সংশ্লিষ্টদের।
এভাবে সিনেমাগুলো ফ্লপের কারণ হিসাবে সংশ্লিষ্টরা দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে দায়ী করছেন।
তারা মনে করছেন, এ মুহূর্তে দেশের মানুষ প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা দেখার মতো অবস্থায় নেই। এদিকে এক মাস পরেই রোজা শুরু হবে। এ মাস পুরো সময়টা প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ থাকবে। তাই সবার নজর এখন ঈদে। সিনেমা সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সিনেমার এ খরা ঈদে কেটে যাবে। দর্শক আবারও প্রেক্ষাগৃহমুখী হবেন।
এদিকে শুধু সিঙ্গেল স্ক্রিনের অবস্থাই যে খারাপ তা নয়। কমেছে সিনেপ্লেক্সের দর্শকও। এর কারণ হিসাবে দেশের পরিস্থিতির পাশাপাশি সিনেমার মানও একটি বিষয় বলে মনে করছেন স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (বিপণন ও মিডিয়া) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘তুলনামূলকভাবে এখন দর্শক অনেক কম। দেশের পরিস্থিতি একটি বিষয় আছে, তবে সিনেমাগুলোও দেখার মতো কি না সেটাও ভাবতে হবে।’
এদিকে দর্শক খরা ও মানহীন সিনেমা মুক্তির বিষয়টির সঙ্গে সঙ্গে ঢালিউডের জন্য আরও একটি হুমকির বিষয় হচ্ছে, সিনেমা নির্মাণ কমে যাওয়া। গত কয়েক বছর ধরে তুলনামূলকভাবে কমেছে সিনেমা নির্মাণ। ভালো গল্পের ও নতুন সিনেমা নির্মাণের প্রক্রিয়া চলমান না থাকলে ও মানসম্পন্ন সিনেমা মুক্তি না দেয়া হলে সিনেমার এ সংকট নিরসন কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন সিনেমা বিশ্লেষকরা।