বিশিষ্ট অভিনেত্রী নাজমা আনোয়ার-এর আজ ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর (১৫ ডিসেম্বর রাত সোয়া ২টায়), ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। প্রয়াত এই গুণী অভিনেত্রী প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই । তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
নাজমা আনোয়ার ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ জুন, মুন্সিগঞ্জ জেলার টুঙ্গিবাড়ি থানার, ধামারন কাজি বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম কাজী আমির হোসেন (সরকারী হরগঙ্গা কলেজের আরবির অধ্যাপক ছিলেন)। মায়ের নাম শফিকুননেছা বাহরামান্দ বানু। চার বোনের মধ্যে নাজমা আনোয়ার ছিলেন দ্বিতীয়। তাঁর বড় বোন আজমেরি জামান রেশমা ছিলেন, চলচ্চিত্র, বেতার ও টিভির খ্যাতিমান অভিনেত্রী।
১৯৭১-এ মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে নাজমা আনোয়ার ও তাঁর স্বামী মোস্তফা আনোয়ার সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। নাজমা আনোয়ার ছিলেন ওপার বাংলায় যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবাদান কেন্দ্রের একজন নিবিড় সেবিকা ও পরিচর্যাকারী।
নাজমা আনোয়ার ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে, ঢাকা ড্রামা সার্কেলে যোগ দেন, থিয়েটার কর্মী হিসেবে। মঞ্চে তাঁর প্রথম নাটক ‘দান্তের মৃত্যু’। ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে, আরণ্যক নাট্যদলে যোগদান করেন।আশির দশকে বৈচিত্র্যধর্মী সব নাটকে নাজমা আনোয়ার, প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী হিসেবে, মঞ্চে নিজের আসনটি আপন যোগ্যতায় পাকাপোক্ত করে নেন। মঞ্চে তাঁর অভিনয়ে দুই বাংলার দর্শকই মুগ্ধ হয়েছে। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য মঞ্চনাটকের মধ্যে- গিনিপিগ, ওরা কদমআলী, ইবলিশ, সমতট, কোরিওলেনাস অন্যতম।
পরবর্তীতে টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেও তিনি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। গুনী অভিনয়শিল্পী হিসেবে অগণিত দর্শকদের হূদয়ে ভালোবাসার আসন গড়েছেন, নিজের অভিনয় স্বকীয়তা দিয়ে। তাঁর স্মরণীয় টিভিনাটকের মধ্যে রয়েছে- উদ্বাহের উদ্বোধন, সাতজন যাত্রী, সময় অসময়, করিমন-সমিরন, তাঁর রহস্যের হাসি, হারাণের নাতজামাই, সংসার সখী, ঘুণ, জননী জন্মভূমি, কোথাও কেউ নেই, প্যাকেজ সংবাদ, করিমন বেওয়া, প্রভৃতি।
২০০১-এ, মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবির জীবনীর উপর ভিত্তি করে নির্মিত টেলিভিশন নাটক ‘করিমন বেওয়া’তে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য অভিনেত্রী নাজমা আনোয়ার বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন।
দীর্ঘ অভিনয় জীবনে তিনি নিয়মিত না হলেও, সুস্থধারার বেশ কয়েকটি চলচিত্রে অভিনয় করেছেন৷ এর মধ্যে রয়েছে- শঙ্খনীল কারাগার, দুখাই, জয়যাত্রা, শঙ্খনাদ, হাজার বছর ধরে প্রভৃতি৷
একজন গুণী মেধাবী অভিনয়শিল্পী হিসেবে নাজমা আনোয়ার সুপরিচিত ছিলেন। তাঁর অভিনয়ের স্বতন্ত্র ধারা দর্শকমহলে সমাদৃত চিরদিন।
বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতির পথে রয়েছে তাঁর বলিষ্ঠ উজ্জ্বল পদচিহ্ন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ও বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতিতে তাঁর অবদান, অবশ্যই স্মরণযোগ্য।
(তথ্যসূত্র ও ছবি- ইন্টারনেট থেকে)
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন