বিশিষ্ট অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্র প্রযোজক মালতী দেবী’র চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ

বিশিষ্ট অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্র প্রযোজক মালতী দেবী’র চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ । তিনি ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। প্রয়াত এই গুণি অভিনেত্রীর স্মৃতির প্রতি জানাই বিন্ম্র শ্রদ্ধা। তাঁর আত্মার চিরশান্তি কামনা করি।
মালতী দেবী ১৯৩৮ সালে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্ম নেয়া মালতী দেবী, ছোটবেলা থেকেই শিল্প-সংস্কৃতির সাথে জড়িত হন। অভিনয় ও গানের প্রতি ছিল তাঁর প্রচন্ড ভালোবাসা।
মালতী দেবী চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন ভারতের কলকাতায়, ‘জাগ্রত ভারত’ নামে একটি ছবিতে। এরপরে তিনি ঢাকায় অসংখ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
মালতী দেবী অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবিসমূহের মধ্যে- সুয়োরাণী দুয়োরাণী, নিমাই সন্যাসী, সপ্তডিঙ্গা, অন্তরঙ্গ, চম্পাকলি, আপন পর, সাধারণ মেয়ে, শনিবারের চিঠি, তিতাস একটি নদীর নাম, জোয়ার ভাঁটা, সুখ দুঃখ, বাংলার মুখ, রাতের পর দিন, চোখের জলে, একমুঠো ভাত, শাহজাদা, স্বামী, সতী নারী, আমির ফকির, সাক্ষী, সন্ধান, অন্যতম।
তিনি একাধারে প্রযোজক-পরিবেশক ও প্রদর্শকও ছিলেন। তাঁর প্রযোজনা-পরিবেশনা সংস্থার নাম, ‘উত্তম চিত্রকথা’। সোনারগাঁ-এ ‘মায়া টকিজ’ নামে সিনেমা হল ছিল তাদের, দিনাজপুরেও সিনেমা হল ছিল।
মালতী দেবী’র প্রযোজনা-পরিবেশনা থেকে নির্মিত ছবিসমূহ- সংঘাত, সতীপুত্র আব্দুল্লাহ, আমার জান, আখেরী হামলা, মুক্তির সংগ্রাম, রঙ্গীন রংবাজ, সাবাস বাঙ্গালী, ভন্ড ওঝা, দুষ্টু ছেলে মিষ্টি মেয়ে, দানব সন্তান, ভালবাসা দিবি কিনা বল, প্রভৃতি।
একজন গুণি অভিনেত্রী ছিলেন মালতী দেবী। তিনি অভিনেত্রী হিসেবে যেমন সফল ছিলেন, পাশাপাশি এ দেশের নারী চলচ্চিত্র ব্যবসায়ী হিসেবেও ছিলেন- একজন সংগ্রামী সফল চলচ্চিত্র ব্যবসায়ী।
মালতী দেবী’র পরিবারের প্রায় সকল সদস্যই চলচ্চিত্রের সাথে জড়িত। বলা যেতে পারে আদর্শ চলচ্চিত্রপরিবার তাঁদের। তাঁর স্বামী অজিত কুমার দে ছিলেন চলচ্চিত্রের স্থীরচিত্রগ্রাহক। তিন মেয়ে- কাবেরী, শুভ্রা ও শুক্লা তিনজনই বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী। তাঁর জামাতা প্রদীপ দে ও ছেলে উত্তম আকাশ স্বনামধন্য চিত্রপরিচালক। তাঁর মেয়ের ঘরের নাতি, এক সময়ের বিখ্যাত শিশুশিল্পী মাঃ সুদীপ (সুদীপ দে), যিনি এখন চলচ্চিত্র প্রযোজনার সাথে জড়িত।
বাংলাদেশের একজন ভালোমানের অভিনয়শিল্পী মালতী দেবী। তিনি বেতার এবং টেলিভিশনেরও একজন অভিনেত্রী ও কন্ঠশিল্পী ছিলেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে তথা শিল্প-সংস্কৃতিতে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের অনবদ্য অবদান- অবশ্য, অবশ্যই শ্রদ্ধার সাথে স্মরণযোগ্য।