বিশিষ্ট অভিনেতা ও চিত্রপরিচালক সিরাজ হায়দার-এর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৮ সালের ১১ জানুয়ারি, তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। মৃত্যুদিবস-এ তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
সিরাজ হায়দার ১৯৪৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি, মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম-এ জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে, নবম শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে পূর্ব পাকিস্তান জাতীয় দিবসে ‘টিপু সুলতান’ নাটকে ‘করিম শাহ’ চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মত অভিনয় শুরু করেন। নিজের এলাকায় প্রচুর মঞ্চনাটকে অভিনয় করেছেন তিনি।
একসময় চিত্রপরিচালক-নাট্যকার আবদুল্লাহ আল মামুনের সহকারী হিসেবে চলচ্চিত্রে তাঁর যাত্রা শুরু হয় । পরবর্তিতে অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রে সুপরিচিত হয়ে ওঠেন।
সিরাজ হায়দার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘সুখের সংসার’। নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত এই চলচ্চিত্রে তিনি খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করেন।
তাঁর অভিনীত অন্যান্য ছবিগুলোর মধ্যে- খোকা সোনা, আদম বেপারী, আইন আদালত, তুমি বড় ভাগ্যবতী, টপ টেরর, দুর্দান্ত দাপট, আজকের প্রতিবাদ, আনন্দ অশ্রু, ভালোবাসার ঘর, গুণ্ডার প্রেম, জীবন যেখানে, আম্মাজান, নির্মম, বাস্তব, মন দিয়েছি তোমাকে, প্রাণের চেয়ে প্রিয়, প্রেম পিয়াসী, রঙ্গীন সুজন সখী, নিস্পাপ বধূ, পাগল মন, ক্ষুদে যোদ্ধা, প্রিয়াংকা, হাজার বছর ধরে, মনের মাঝে তুমি, শত্রু শত্রু খেলা, এইতো প্রেম, কোটি টাকার ফকির, কোটি টাকার প্রেম, নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, কিস্তিমাত, মেন্টাল, অপমানের জ্বালা, ক্রাইম রোড, রুদ্র দ্য গ্যাংস্টার, কার্তুজ, জীবন যন্ত্রণা, ভালোবাসা ডটকম অন্যতম।
এই গুণি অভিনেতা চলচ্চিত্র ছাড়াও টেলিভিশন, মঞ্চ, রেডিও ও যাত্রাতেও অভিনয় করেছেন এবং মঞ্চনাটক নির্দেশনাও দিয়েছেন। ১৯৭৬-এ তিনি ‘রঙ্গনা নাট্যগোষ্ঠী’ প্রতিষ্ঠা করেন। ‘রঙ্গনা নাট্যগোষ্ঠী’র হয়ে তিনি অনেক নাটক লিখেছেন ও নির্দেশনা দিয়েছেন।
সিরাজ হায়দার পরিচালনা করেছিলেন ২টি চলচ্চিত্রও।
তাঁর পরিচালিত ছবি- ‘আদম ব্যাপারী’ (মুক্তিপায়নি) ও ‘সুখ’।
প্রতিভাবান অভিনেতা, তুখোড় নাট্যকর্মী সিরাজ হায়দার, তাঁর সৃজনশীল কর্মের মাধ্যমে আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন বছরের পর বছর ধরে।