দুপুরের দিকে ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বিচ্ছেদের কথা জানান ঢাকা অ্যাটাক খ্যাত নির্মাতা দীপংকর দীপন। জানান, তার স্ত্রী সুংযুক্তা মিশুর সঙ্গে আর সংসার করছেন না। আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ হয়ে গেছে তাদের।
দেশের আলোচিত এই নির্মাতা বলেন, ‘আমরা (দীপংকর দীপন ও সংযুক্তা মিশু) সবাইকে অবগত করতে চাই, পারস্পরিক সমঝোতা ও একে অপরের প্রতি সম্মান রেখে পরিবারের অনুমতিতে আমাদের বিয়েবিচ্ছেদ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।পরবর্তী জীবনে আমরা একে অপরের মঙ্গল ও সুস্বাস্থ্য কামনা করি। বন্ধু-বান্ধব ও শুভানুধ্যায়ীদের আগ্রহ ও ভালোবাসার প্রতি সম্মান রেখে বিনীত অনুরোধ করছি এই বিষয়ে আমাদের কোনো প্রশ্ন বা প্রসঙ্গ উত্থাপন না করার জন্য।’
এদিকে ফেসবুকে দীপন বিচ্ছেদের খবর জানালেও এ নিয়ে মিশু কিছু বলেননি। তবে তিনিও দীপনের পোস্টের পর নিজের টাইমলাইনে কয়েক লাইন লিখেছেন।তার কথায়, ‘তোমাকে ক্ষমা করে দিলে নিজের সাথে খুব অবিচার করা হবে। কারণ তুমি আমার মুক্ত মনের গোটা একটা জীবনকে রক্তপাতহীনভাবে হত্যা করেছ। অন্ধকার কারাগারে আমার রঙিন নেশাকে বিবস্ত্র করেছ।’
এরপর তিনি লেখেন, ‘আমার দৃষ্টিকে টেনে-হিঁচড়ে কালো দেয়ালে শূলবিদ্ধ করেছ।
তোমাকে ক্ষমা না করলে যদি আমাকে রাজদ্রোহী করা হয়, তাহলে মৃত্যুদণ্ড মঞ্জুর; কিন্তু তোমার ক্ষমা মঞ্জুর না…. সত্যিই না…।’
এরপর লেখেন, ‘পরবর্তী জীবনে আমরা একে অপরের মঙ্গল ও সুস্বাস্থ্য কামনা করি। বন্ধু-বান্ধব ও শুভানুধ্যায়ীদের আগ্রহ ও ভালোবাসার প্রতি সম্মান রেখে বিনীত অনুরোধ করছি এই বিষয়ে আমাদের কোনো প্রশ্ন বা প্রসঙ্গ উত্থাপন না করার জন্য।’
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই আলাদা বসবাস করছিলেন এই দম্পতি। গত বছর এক নায়িকার একটি পোস্টকে ঘিরে তাদের দূরত্বের বিষয়টি সামনে আসে।
ঘটনার সূত্রপাত সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগ। এর ঘোষণা পর্বে অংশ নিয়েছিলেন দীপংকর দীপন। সেখানে শোবিজের আরো অনেক তারকা উপস্থিত ছিলেন। পুত্র রাজ্যকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন পরী মণিও। নায়িকার সন্তানকে কোলে নিয়ে ছবি তুলেছিলেন দীপনও। তখন তার পাশে এসে দাঁড়ালেন নায়িকা জাহারা মিতু। দুজনই হাসিমুখে ক্যামেরায় দিলেন পোজ। সেই ছবি নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন জাহারা মিতু। ক্যাপশনে লেখেন, ‘‘আমাদের একটা ‘পরীর বাচ্চা’ আছে।”
বিষয়টিকে আলাদাভাবে দেখেননি নির্মাতা দীপন। কিন্তু পরক্ষণেই টের পান, নেটিজেনদের অনেকে তার ও মিতুর মধ্যে ‘বিশেষ সম্পর্ক’র অস্তিত্ব খুঁজে বেড়াচ্ছে। মিতুর পোস্টের স্ক্রিনশট নিয়ে লম্বা স্ট্যাটাস দেন নির্মাতা। এ পর্যায়ে লেখেন, ‘আর পারিবারিক অশান্তির কথা না-ই বা বললাম, সেটা সবাই বুঝবে।’
ঘটনায় তৃতীয় ব্যক্তির আগমন ঠিক এখানেই। তিনি ছিলেন দীপনের সেই সময়ের স্ত্রী সংযুক্তা। তিনিও পোস্ট দিয়েছিলেন। সোশ্যাল হ্যান্ডেলে সংযুক্তা বললেন, ‘নির্মাতা দীপংকর দীপন কার সঙ্গে মেশে, কী খায়, কী পরে, কোন দেশে যায়, আর কী কী করে বেড়ায়, আমি সেটা জানি না। আর কেন জানি না, এটা আমাদের, মানে আমার আর দীপনের একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু আমাকে নিজেদের দোষ ঢাকতে বলির পাঁঠা বানাবেন না।’
তখনই জানা যায়, তাদের মধ্যে বেশ দূরত্ব। একসঙ্গে থাকছেন না দীপন ও সংযুক্তা। অবশেষে তারা বিচ্ছেদের পথে হাঁটলেন।
প্রসঙ্গত, রংপুরের ছেলে দীপনের জন্ম ১৯৭৮ সালে। দীপঙ্কর দীপন প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগ থেকে। ২০১৪ সালের ৩০ মে দীপন মানিকগঞ্জের মেয়ে সংযুক্তা সাহার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সংযুক্তা সাহা স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা।