‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের প্রবক্তা চিত্রনায়ক-সমাজসেবক একুশেপদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব ইলিয়াস কাঞ্চন সমাজ কল্যাণে দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ অবদান রেখে আসার জন্য ‘ট্র্যাব’ আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হতে যাচ্ছেন। আগামী ১৯ নভেম্বর বিকেলে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে ‘টেলিভিশন রিপোর্টার্স ইউনিটি অব বাংলাদেশ (ট্র্যাব)’ সম্মাননায় ভূষিত হতে যাচ্ছেন ইলিয়াস কাঞ্চন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংগঠনটির সভাপতি সালাম মাহমুদ। বিষয়টি অবগতও আছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে কী সম্মাননা পাবার আশায় কিন্তু আমি দীর্ঘদিন ধরে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন করছি না। একজন নাগরিক হিসেবে দায়িত্ববোধের জায়গা থেকেই কাজ করে যাই। আজ দীর্ঘদিন পরে হলেও নিরাপদ সড়ক চাই জাতীয়ভাবে উদযাপিত হচ্ছে। এটি অনেক দিনের শ্রমের অর্জন। তবে পুরস্কারপ্রাপ্তির কথা এলে মন ভীষণ খারাপ হয়ে যায়। কারণ, আমার এমন অনেক সিনেমা রয়েছে যেসব সিনেমা দিয়ে আমার বেশ কয়েকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার শতভাগ সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু আমি পাইনি। কেন পাইনি তাও জানি না। শ্রদ্ধেয় সুভাষ দত্তের ‘বসুন্ধরা’ সিনেমাটি যখন মুক্তি পেল-সবাই আমাকে সত্যিকারের পেইন্টারই মনে করেছিলেন। কিন্তু আমাকে পুরস্কার দেয়া হয়নি-অল্প বয়সে পুরস্কার পেয়ে আমার ভাব বেড়ে যেতে পারে বিধায়, বিষয়টি আজো আমার কাছে বোধগম্য নয়। যাই হোক, সালামকে আমি অনেক স্নেহ করি ভালোবাসি। আমাকে সশরীরে এসে নিমন্ত্রণ দিয়ে গেছেন, আমি চেষ্টা করব অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে সম্মাননা গ্রহণ করার-ইনশাআল্লাহ।’
এদিকে ইলিয়াস কাঞ্চন এরই মধ্যে শেষ করেছেন ‘নয়া দরবেশ’ নামের একটি কাজ। এটি নির্মাণ করেছেন শাহ আলম নূর। এতে কাজ করে ভীষণ তৃপ্ত তিনি। ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, পাবনার পাড় ঘোড়াদ হতে জাহানারা কাঞ্চন উচ্চবিদ্যালয়টিকে তিনি কলেজে রূপান্তর করার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সেখানকার আরো একটি মজার তথ্যও তিনি জানিয়েছেন। আর তা হলো সেই উচ্চবিদ্যালয়কে ঘিরে একটি বাজারেরও সৃষ্টি হয়েছে যার নাম দেয়া হয়েছে ‘কাঞ্চন’ বাজার। বিষয়টি নিয়ে ভীষণ আবেগাপ্লুত কাঞ্চন।
চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের অভিষেক ঘটে ১৯৭৭ সালের ২৬ মার্চ সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘বসুন্ধরা’ ছবিতে ববিতার বিপরীতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। এরপর একই পরিচালকের ‘ডুমুরের ফুল’ ছবিতে তিনি অভিনয় করেন। শাবানার বিপরীতে একটি ছবিতেই তিনি অভিনয় করেছেন। আজিজুর রহমান বুলি পরিচালিত সে ছবির নাম ‘শেষ উত্তর’। তবে ইলিয়াস কাঞ্চন জুটি হয়ে সবচেয়ে বেশি অভিনয় করেছেন চম্পা, দিতি ও অঞ্জু ঘোষের সাথে। বিশেষত অঞ্জু ঘোষের সাথে তোজাম্মেল হক বকুলের ‘বেদের মেয়ে জোছনা’ তো দেশীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী চলচ্চিত্র।
দিতির সাথে জুটি বেঁধে ইলিয়াস কাঞ্চন প্রথম অভিনয় করেন পরলোকগত পরিচালক মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘স্বর্গ নরক’ ছবিতে। চম্পার সাথে প্রথম অভিনয় করেন শিবলী সাদিক পরিচালিত ‘তিন কন্যা’ চলচ্চিত্রে। এই পর্যন্ত তিনি তিন’শ ত্রিশটিরও অধিক চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয় করেছেন। আলমগীর কবির পরিচালিত ‘পরিণীতা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ১৯৮৬ সালে পেয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এরপর চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘শাস্তি’ চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তাকে একই পুরস্কার দিলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। ইলিয়াস কাঞ্চনের প্রথম একক প্রযোজিত চলচ্চিত্র ‘বাদশা ভাই’। তিনি দু’টি ছবি নির্দেশনা দিয়েছেন। ছবি দু’টি হচ্ছে ‘বাবা আমার বাবা’ (মুক্তি ২০০৮ সাল) ও ‘মায়ের স্বপ্ন’ (মুক্তি ২০১০ সাল)।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন