বরেণ্য চলচ্চিত্রকার ও সাংবাদিক ফজলুল হককে কলকাতা সায়েন্স সিটি মিলনায়তনে ইন্ডিয়া বাংলাদেশ রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন এর পক্ষ থেকে আজীবন সম্মাননা অ্যাওয়ার্ড(মরণোত্তর) প্রদান করা হয়।গত ৩ আগষ্ট ২০২৪ বিকেল ৫ টায় ইন্ডিয়া বাংলাদেশ রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন এর উদ্যোগে “দুই বাংলার সাংস্কৃতিক সম্প্রীতি ” শীর্ষক আলোচনা,বরেণ্য চলচ্চিত্রকার,সাংবাদিক ফজলুল হক ও বিনোদ বিহারি চৌধুরীর তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রয়াত ফজলুল হক এর পক্ষে আজীবন সম্মাননা অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন প্রয়াত ফজলুল হক এর পুত্র ফরিদুর রেজা সাগর এর সহধর্মিণী পান সুপারির সিইও কনা রেজা।অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মাননীয় মন্ত্রী ড. হুমায়ুন কবির ও সংগঠনের সভাপতি ড. নটরাজ রায় সম্মাননা তুলে দেন।
ইন্ডিয়া বাংলাদেশ রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব দাস এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পানসুপারির কর্নধার কনা রেজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হামিদা খানম,ট্রাব সভাপতি সালাম মাহমুদ, ভারতের শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার, পদ্মশ্রী মাসুম আখতার প্রমূখ। অনুষ্ঠানে প্রয়াত ফজলুল হককে নিয়ে শহিদুল আলম সাচ্চু পরিচালিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।ফজলুল হক এর তথ্যচিত্র দেখে দুই বাংলার খ্যাতিমান অতিথিবৃন্দ আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন এবং ফজলুল হক এর ভূয়সী প্রশংসা করেন।বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ও চলচ্চিত্র সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ফজলুল হক ছিলেন পথিকৃৎ।
১৯৩০ সালের ২৬ মে বগুড়ার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ফজলুল হক এর জন্ম।মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে রনাঙ্গনে অন্যতম সংগঠকের ভুমিকা পালন করেন তিনি ।স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কথিকা লিখতেন। আকাশবাণী কলকাতায় পদ্মা, মেঘনা,যমুনা নামে নাটক রচনা ও পরিচালনা করেছেন। আকাশবাণীতে মনি হক নামে অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন। বাংলা ভাষাকে সর্বস্তরে পৌঁছে দিতে ১৯৭২ সালে ঘড়ির ডায়ালে বাংলায় সময় লেখা ঘড়ি চালু করেন।১৯৭৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী মুক্তি পায় তার চলচ্চিত্র “উত্তরণ”। “প্রেসিডেন্ট” নামে একটি শিশুতোষ চলচ্চিত্র নির্মাণ করে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। ১৯৬০ সালে “আযান ” নামে একটি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লেখা শুরু করেছিলেন।
১৯৫০ সালে ফজলুল হক বগুড়া থেকে “সিনেমা ” নামে একটি চলচ্চিত্র বিষয়ক পত্রিকা প্রকাশ করেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে তখনও সিনেমা নির্মাণ শুরু হয়নি।ফজলুল হক পত্রিকা প্রকাশের পাশাপাশি ” ইনল্যান্ড প্রেস” নামে একটি প্রেস চালু করেছিলেন। এই প্রেস থেকে সৃজনশীল পুস্তক প্রকাশনার কাজও তার উদ্যোগে শুরু হয়েছিল। বাংলাদেশের রিয়েল স্টেট ব্যবসার আজকে যে অগ্রগতি তার রুপকারও ফজলুল হক। ষাটের দশকের শেষ দিকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ‘সোনার চামচ’ নামে একটি খাবারের দোকান প্রতিষ্ঠা করেন।বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর এর নাম হয় “পিঠা ঘর”।
এ সময়ে তিনি অনির্বাণ নামে আইপিএস চালু করেছিলেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য প্রফেসর ড. হামিদা খানম, সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পানসুপারির কর্নধার কনা রেজা,সাংবাদিক শেখ জামাল হোসাইন, অভিনেতা সাজ্জাদ হোসেন দোদুল, সাংবাদিক মাহাবুবুর রহমান চঞ্চল, ভারতের চলচ্চিত্র পরিচালক রাজকুরাজকুমার পাল,সংগীত শিল্পী কুশল চ্যাটার্জিসহ কয়েকজনকে ইন্ডিয়া বাংলাদেশ সাইনিং পার্সোনালিটি অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়।