নাসিম রুমি: ৪৮তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা প্রাঙ্গণে দুপুর গড়তেই বইপ্রেমীদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। এসবিআই অডিটোরিয়ামের বাইরে বইপ্রেমীদের হাতে মোবাইল ক্যামেরা তাক করা। সবার সঙ্গে হাসিমুখে সেলফি তুলছেন টালিউড অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। তবে বই কিনতে নয়, রবিবার অভিনেত্রী বইমেলায় গিয়েছিলেন তার নতুন ছবির সঙ্গেই দর্শকদের পরিচয় করিয়ে দিতে।
আকাশবাণীর কর্মী ও লেখিকা বেলা দে-র জীবনীচিত্রে অভিনয় করেছেন টালি অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। ছবির নাম ‘বেলা’। অভিনেত্রী বলেন, বেলা যে সময়ে নারী ক্ষমতায়নে ব্রতী হয়েছিলেন, সেই সময়ে মেয়েদের সেভাবে নিজের কথা বলার অধিকার ছিল না। এ রকম একটি চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে সৌভাগ্য মনে করছেন অভিনেত্রী।
‘বেলা’র কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঋতুপর্ণা। বেলা নিজে রান্না করতে পছন্দ করেন। অভিনেত্রী মুচকি হেসে বলেন, ব্যস্ততার কারণে কলকাতায় বাড়িতে রান্না করতে সময় পাই না। তবে সিঙ্গাপুরে অনেক সময়েই নিজের হাতে রান্না করি এবং আমার হাতের রান্না সবাই বেশ পছন্দও করেন।
তিনি বলেন, তার মা ছিলেন বেলার রন্ধনশিল্পসংক্রান্ত বইগুলোর ভক্ত। সম্প্রতি মাকে হারিয়েছেন তিনি। মায়ের খুব ইচ্ছে ছিল ছবিটা দেখার। কিন্তু সেটা হলো না। ঋতুপর্ণা বলেন, আমার বিশ্বাস, মা যেখানেই রয়েছেন, এই ছবিকে আশীর্বাদ করবেন। তিনি বলেন, মা যখন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, সেই সময় এ ছবির শুটিং করেছিলেন তিনি।
সেই কঠিন সময়ে ব্যক্তিগত জীবন এবং পর্দায় বেলার জীবন যেন কোথাও মিলেমিশে গিয়েছিল অভিনেত্রীর। আজ ঋতুপর্ণার বাড়িতে সরস্বতী পূজার আয়োজন। কিন্তু মায়ের কথা ভেবেই চলতি বছরে বিশেষ একটা জাঁকজমকের ইচ্ছে নেই তার।
অনিলাভ চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘বেলা’ ছবিতে একঝাঁক অভিনেতা অভিনয় করেছেন। রয়েছেন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়, বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায়, সৌরভ চক্রবর্তী, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, ভদ্রা বসু প্রমুখ।
নিজের প্রথম ছবির জন্য বেলা দে-র মতো একজন নারীকেই কেন বেঁচে নিলেন পরিচালক?—এমন প্রশ্নের উত্তরে অনিলাভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, দীর্ঘদিন নারীদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি— যারা সারাদিন বাড়িতে কাটান, তারা কোনো শিল্পীর থেকে কম নয়। যিনি রান্না করছেন তিনিও শিল্পী। এ ছবির মাধ্যমে নারী স্বাধীনতার বার্তা দিয়ে ‘বেলা’কে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে চান তিনি। পরিচালক বলেন, ছবিটির শুটিং শেষ হয়েছে। মুক্তির দিনক্ষণ শিগগিরই জানানো হবে।