নাসিম রুমি: ‘এখন তো চান্দেও চিনে না, আমারে সূর্যেও চিনে না। চিনব কেমনে, যে চিনাইব সে-ও তো চিনে না’ শিরোনামের একসময়ের জনপ্রিয় বাংলা ব্যান্ডের গানটির কথা মনে আছে? গানটির গায়ক বিপ্লব। ৮০’র দশকের অন্যতম জনপ্রিয় ‘প্রমিথিউস’ ব্যান্ডদলের প্রধান ও ভোকাল। লম্বা চুল, আলখেল্লা পরা যে তরুণ মানুষের মনের কথাগুলো সোজাসাপ্টা সুরে সুরে গাইতেন, সব বয়সী এবং সব শ্রেণির মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছিল সেসব গান।
ব্যান্ড, মিক্সড ও একক অ্যালবাম, স্টেজ শো- সব জায়গায় নব্বই দশকে দাপুটে বিচরণ ছিল বিপ্লবের। এলআরবি, নগরবাউলের পাশাপাশি হেঁটেছে প্রমিথিউস। ব্যান্ডে যেমন সরব ছিলেন, তেমনি আইয়ুব বাচ্চু , জেমস, হাসান ও বিপ্লব সমানতালে উচ্চারিত একটি নাম ছিল। নব্বই দশকে এই চার ব্যান্ড ও চার শিল্পীর সমান বিচরণে মুখর ছিল বাংলাদেশের গানের জগৎ।
বছরের পর বছর ব্যান্ড প্রমিথিউসকে স্টেজ শো এবং টেলিভিশনের কোনো অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি। কোথাও নেই বিপ্লব। ফেসবুকে মাঝেমধ্যে উঁকি দেন। এক সময়ের দেশ মাতানো গায়ক বিপ্লব এখন পরিবার নিয়ে থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কুইন্সে। স্ত্রী, দুই ছেলে আদিব,অ্যারন ও মেয়ে তটিনীকে নিয়ে বিপ্লবের এখনকার সংসার।
তবে এখন সংসার চালাতে এই গায়ক নিউইয়র্কে ট্যাক্সি সার্ভিসের কাজ করছেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমকে বিপ্লব জানিয়েছেন, নিউইয়র্কে গিয়ে তিনি প্রথম কাজ শুরু করেন আমেরিকান এয়ারলাইনসে। এক বছর পর গাড়ি কিনে ট্যাক্সি সার্ভিস শুরু করেন। দেশের রক গানের জনপ্রিয় এই শিল্পী যুক্তরাষ্ট্রে ট্যাক্সি চালান- ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা শুনলেই হয়তো চমকে যেতে পারেন। তবে বিপ্লব এতে মোটেও বিচলিত কিংবা বিব্রত নন। তিনি যা, তা-ই সবার সামনে থাকতে চান।
বিপ্লবের কথায়, ‘আমি ট্যাক্সি চালাই, বলতে সংকোচ বোধ করি না। আমি তো চুরি করছি না। মানুষকে সেবা দিচ্ছি, বিনিময়ে টাকা নিচ্ছি। আমেরিকা আসার পর আমার অনেক বড় অভিজ্ঞতা হয়েছে। বিদেশ বলতে আমরা দেশে বসে যা বুঝি, বিদেশ আসলে মোটেও তা না। আমেরিকার লাইফ আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে, অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, যা আমার পরবর্তী জীবনে কাজে দেবে।’