English

26 C
Dhaka
মঙ্গলবার, মার্চ ১৮, ২০২৫
- Advertisement -

প্রথিতযশা স্থিরচিত্রগ্রাহক ফিরোজ এম হাসান-এর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- Advertisements -

একে আজাদ: ফিরোজ এম হাসান। স্থিরচিত্রগ্রাহক-ফটোসাংবাদিক ও চলচ্চিত্র প্রযোজক। বহু নামী-দামী চলচ্চিত্রের স্থিরচিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। কাজ করেছেন বিখ্যাত সব পরিচালকদের সাথে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের প্রবীণতম এই স্থিরচিত্রগ্রাহক, এদেশের প্রায় সব চিত্রতারকাদেরই ছবি তুলেছেন। ফটোসাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। তিনি চলচ্চিত্র প্রযোজনাও করেছেন।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র তথা শিল্প-সংস্কৃতিসংশ্লিষ্টদের কাছে ছিলেন জনপ্রিয় চিত্রগ্রাহক ও সবার প্রিয় ‘ফিরোজ মামা’। এই প্রথিতযশা স্থিরচিত্রগ্রাহক ফিরোজ এম হাসান-এর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১৯ সালের ১৭ মার্চ, ৮২ বছর বয়সে, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। প্রয়াত এই গুণি মানুষটির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

ফিরোজ এম হাসান (ফিরোজ মহিদুল হাসান) ১৯৩৭ সালের ১৫ অক্টোবর, গোপালগঞ্জের পাইককান্দি গ্রামে, মাতুতালয়ে জন্মগ্রহন করেন। পৈত্রিক বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতিতে। বাবার নাম কে এম ইদ্রিস হোসেন (ফরেস্ট রেঞ্জার অফিসার ছিলেন)। মাতা রাবেয়া খাতুন। আট ভাই- বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন ফিরোজ এম হাসান । বাবার বদলির চাকুরির কারনে তিনি, লেখা-পড়া করেছেন দার্জিলিং, রাঙামাটি ও খুলনায়। খুলনার ‘সেন্ট যোসেফ স্কুল’ থেকে ১৯৫৬ সালে তিনি মেট্রিকুলেশন পাস করেন।

শৈশব থেকে তাঁর ফটোগ্রাফীর প্রতি ছিল প্রবল নেশা। প্রথম জীবনে তিনি কাপ্তাইয়ে একটি ফটো স্টুডিও দেন। যার নাম ছিল ‘স্টুডিও ফিরোজ’।

১৯৬০ সালে ঢাকায় আসেন ফিরোজ এম হাসান। ঢাকার বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ছবি তুলে ওয়াশ করতেন, নিউমার্কেটের তৎকালীন নামকরা ‘আকস্ ফটোগ্রাফার্স স্টুডিও’তে। ওখানেই পরিচয় হয় খ্যাতিমান স্টিল ক্যামেরাম্যান ও ‘আকস্ ফটোগ্রাফার্স স্টুডিও’র মালিক ফয়জুর রহমান খান-এর সাথে। যিনি মুস্তাফিজ পরিচলিত ‘হারনো দিন’ চলচ্চিত্রে একদিন ছবি তোলার সুযোগ করে দেন তাঁকে । তার পর থেকে ফিরোজ এম হাসান, ফয়জুর রহমান খান’সহ কয়েকজন স্টিল ক্যামেরাম্যান-এর সাথে সহকারী হিসেবে কাজ করেন।

একক স্থিরচিত্রগ্রাহক হিসেবে তাঁর প্রথম ছবি মইনুল হোসেন পরিচালিত ‘হারজিৎ’, মুক্তি পায় ১৯৭৫ সালে। ফিরোজ এম হাসান অন্যান্য যেসব ছবিতে কাজ করেছেন তাঁর মধ্যে- ফান্দে পড়িয়া বগা, সেয়ানা, রং বেরং, দম মারো দম, মিন্টু আমার নাম, ফকির মজনু শাহ, নদের চাঁদ, ছোট মা, এতিম, আপন ভাই, মাটির পুতুল, মাসুম, রাজা সাহেব, ঈদ মোবারক, নাত বৌ, বড় ভালো লোক ছিল, আশার প্রদীপ, আর্শিবাদ, আশা, অন্ধবধূ, নয়নের আলো, মান অভিমান, সাহেব, জিপসি সর্দার, প্রেম কাহিনী, প্রেমিক, দোষী, স্বর্পরাণী, শুধু তুমি, গৌরব, মশাল, সুদ আসল, হারানো সুর, শিকার, জিদ্দি, অন্যায়, ভাই বন্ধু, আয়না মতি, কারাগার, রাক্ষুসী, তোমার সুখই আমার সুখ, অন্যতম।

তিনি দু’টি ছবি প্রযোজনাও করেছিলেন। প্রথম ছবি ‘দোষী’ দ্বিতীয় ছবি ‘চাষার ছেলে’ (অসমাপ্ত)।

ব্যক্তিজীবনে তিনি ১৯৬৫ সালে, সুরাইয়া বেগমের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সুরাইয়া বেগম স্কুল শিক্ষক। তাদের তিন পুত্রসন্তান, বড় ছেলে নোমান হাসান প্রবাল ও মেজ ছেলে রিয়াজ হাসান রুবিন, কানাডা প্রবাসী আর ছোট ছেলে জিয়া হাসান রোমান ঢাকায় ব্যবসা করেন।

প্রথিতযশা স্থির চিত্রগ্রাহক ফিরোজ এম হাসান, ফটো সাংবাদিক হিসেবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র বিষয়ক অনেক পত্রিকায় কাজ করেছেন।
তিনি ছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস)-এর সদস্য, বাংলাদেশ সিনে স্টিল ফটোগ্রাফার্স এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সদস্য, ছিলেন চলচ্চিত্র প্রযোজকও।

তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংগঠন কর্তৃক নানা পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছেন, পেয়েছেন বিশেষ সম্মাননা।

শান্ত-শিষ্ট, নরম মনের অতি ভালো মানুষ ছিলেন ফিরোজ এম হাসান। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সবার প্রিয় ‘মামা’, ফিরোজ মামা। ফিরোজ মামা’র প্রতি অন্তহীন ভালোবাসা-শ্রদ্ধা।ফিরোজ মামা’র মতো কৃতিমান-ভালো মানুষদের মৃত্যু হয় না~ তিনি বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল, আমাদের হৃদয়ে ভালোবাসার মানুষ হয়ে ।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন