ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমনিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় তৃতীয় দফা রিমান্ড শেষে শনিবার (২১ আগস্ট) তাকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালত থেকে গতকাল সন্ধ্যার দিকে পরীমনিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে নেওয়া হয়। সেখানেই কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে পরীমনিকে। এদিকে পরীর পাশের কক্ষেই রয়েছেন আলোচিত আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীর। বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) থেকে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন তিনি।
পরীমনি ও হেলেনা জাহাঙ্গীরের পাশাপাশি কক্ষে থাকার বিষয়টি একটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন কারাগারের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ জেল সুপার আব্দুল জলিল।
জেল সুপার আব্দুল জলিল জানান, বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) আদালতের নির্দেশে মাদক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার হেলেনা জাহাঙ্গীরকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। তাকে কারাগারের রজনীগন্ধা ভবনে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। শনিবার পরীমনিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে তাকেও হেলেনার পাশের কক্ষেই কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
গত ৪ আগস্ট পরীমনিকে তাঁর বনানীর বাসা থেকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। অভিযানে এলএসডি, মদ ও আইস উদ্ধার করা হয় বলে দাবি করা হয় র্যাবের পক্ষ থেকে। তার ড্রয়িংরুমের কাভার্ড, শোকেস, ডাইনিংরুম, বেডরুমের সাইড টেবিল ও টয়লেট থেকে বিপুল পরিমাণ মদের বোতল উদ্ধার করা হয় বলেও দাবি করা হয়। এরপর রাত ৮টা ১০ মিনিটে পরীমনিকে তার বাসা থেকে র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত ১২টা পর্যন্ত পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
পরদিন ৫ আগস্ট বিকেল ৫টা ১২ মিনিটে র্যাব সদর দপ্তর থেকে পরীমনি, রাজ ও তাদের দুই সহযোগীকে বনানী থানায় নিয়ে যায় র্যাবের একটি দল। এরপর র্যাব বাদী হয়ে পরীমনি ও তার সহযোগী দীপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলায় দায়ের করে। রাত ৮টা ২৪ মিনিটে পরীমনি ও তার সহযোগীকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর বনানী থানার মামলায় তাদের সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এ সময় আসামিপক্ষে তাদের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
১০ আগস্ট পরীমনি ও তাঁর সহযোগী দীপুকে আদালতে হাজির করে ফের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি। এ সময় আসামিপক্ষে রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাঁদের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দুই দফায় রিমান্ড শেষে গত ১৩ আগস্ট পরীমনি ও তাঁর সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাঁদের জামিন আবেদন খারিজ করে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।