আজাদ আবুল কাশেম: একজন প্রতিভাবান চলচ্চিত্র সাংবাদিক ছিলেন তিনি। অপরাধ বিষয়ক সাংবাদিকতায়ও ছিল তাঁর অসম্ভব দক্ষতা। প্রায় ৩৫ বছরের বিনোদন সাংবাদিকতার জীবনে, নিজ যোগ্যতা এবং কর্মগুণে খ্যাতির শিখরে অবস্থানও ছিল তাঁর। মানুষ হিসেবেও, চলচ্চিত্রের লোকদের কাছে এবং চলচ্চিত্র সাংবাদিকদের কাছে খুবই প্রিয় ও ভালোবাসার মানুষ ছিলেন । তিনি ‘চিটিংবাজ’ নামে একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনাও করেছেন, যা পরিচালনা করেছিলেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার শিবলি সাদিক। চলচ্চিত্র সাংবাদিকতার অকৃত্রিম বন্ধু-সুহৃদ, স্বনামধন্য সাংবাদিক গোলাম কিবরিয়া’র ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০০৯ সালের ৯ মে, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৩ বছর। প্রয়াণ দিবসে সাংবাদিক গোলাম কিবরিয়া’র স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।
গোলাম কিবরিয়া ১৯৫৬ সালের ২ মে, সিরাজগঞ্জ জেলার এনায়েতপুরে, জন্মগ্রহণ করেন। ‘দেশবাংলা’ পত্রিকার মাধ্যমে ১৯৭৪ সালে তিনি প্রথম সাংবাদিকতার সাথে জড়িত হন ।
সাংবাদিক গোলাম কিবরিয়া এরপর আরো কাজ করেছেন- মুক্তিবাণী, চিত্রবাংলা, ছায়াছন্দ, সংবাদচিত্র এবং অপরাধচিত্র-এ। এরমধ্যে বেশীরভাগ পত্রিকায়ই তিনি নির্বাহী সম্পাদক ও সম্পাদক হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেছেন।
তাঁর সাংবাদিকতা জীবনের সিংহভাগ সময়ই তিনি জড়িয়ে ছিলেন, দেশের ঐতিহ্যবাহী সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠান খবর গ্রুপ-এর সাথে । মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত গোলাম কিবরিয়া ‘দৈনিক খবরে’র বার্তা সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন ।
একজন প্রতিভাবান সাংবাদিক ছিলেন তিনি। অপরাধ বিষয়ক সাংবাদিকতায়ও ছিল তাঁর অসম্ভব দক্ষতা।
প্রায় ৩৫ বছরের বিনোদন সাংবাদিকতার জীবনে, নিজ যোগ্যতা এবং কর্মগুণে খ্যাতির শিখরে অবস্থানও ছিল তাঁর।চলচ্চিত্র সাংবাদিকতায় স্বনামধন্য ও প্রশংসিত চিলেন তিনি। মানুষ হিসেবেও, চলচ্চিত্রের লোকদের কাছে এবং চলচ্চিত্র সাংবাদিকদের কাছে খুবই প্রিয় ও ভালোবাসার মানুষ ছিলেন গোলাম কিবরিয়া। তিনি ‘চিটিংবাজ’ নামে একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনাও করেছেন, যা পরিচালনা করেছিলেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার শিবলি সাদিক।
চলচ্চিত্র সাংবাদিকতার অকৃত্রিম বন্ধু-সুহৃদ গোলাম কিবরিয়া, তাঁর মেধা ও দক্ষতা দিয়ে দেশীয় চলচ্চিত্র সাংবাদিকতাকে করেছেন সমৃদ্ধ। তাঁর হাত ধরে আসা এবং চলচ্চিত্র সাংবাদিকতায় তাঁর কাছে দীক্ষা নেয়া অনেকেই এখন সাংবাদিক হিসেবে শীর্ষে অবস্থান করছেন। সাংবাদিকতায় অনেকের সফল কেরিয়ার গড়ার ক্ষেত্রেও তিনি অনন্য ভুমিকা রেখেছেন। তাই অনেকেই তাঁকে সাংবাদিক গড়ার নিপূণ কারিগর বলে থাকেন। মিশুক স্বভাবের এই মানুষটি তখনকার সময়ের অনেক বিনোদন সাংবাদিকদের কাছেই ছিলেন বটবৃক্ষের মতো, ছিলেন একটি প্রতিষ্ঠান।
গোলাম কিবরিয়া সাংগঠনিকভাবেও ছিলেন অনেক দক্ষ। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সাংবাদিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস)’-এর তিনবার সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। তাঁর অসাধারণ নেতৃত্ব গুণে সফলতার সাথে এগিয়ে গেছে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস)’-এর কার্যক্রম।
সাংগঠনিক দক্ষতা ও একজন প্রকৃত নেতার সবরকম গুনাবলীই ছিলো তাঁর মাঝে। তিনি ‘বাচসাস’-এর জন্য পরবর্তী নেতৃত্ব তৈরীতেও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন।
এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথেও জড়িত ছিলেন । নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’র প্রতিষ্ঠিতা সদস্যদের অন্যতম একজন তিনি। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’র প্রথম মহাসচিব ছিলেন গোলাম কিবরিয়া।
সদাহাস্যজ্বোল, মজার এই মানুষটি চলচ্চিত্র ও চলচ্চিত্রসাংবাদিকদের সীমাহীন ভালোবাসতেন। কর্মদক্ষতায় পরিপূর্ণ একজন ভালো মানুষ ছিলেন তিনি। গোলাম কিবরিয়া শারীরিকভাবে আমাদের মাঝে না থাকলেও, তিনি বেঁচে থাকবেন, তরুণ সাংবাদিকদের আদর্শ হয়ে, প্রজন্মের হাত ধরে, আগামীর প্রজন্মে।