জমে উঠেছে টেলিভিশন প্রগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টেলিপ্যাব) ২০২২-২০২৪ মেয়াদের নির্বাচন। ১৯ মার্চ (শনিবার) শিল্পকলা একাডেমিতে হবে এ নির্বাচন। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা। এবারের নির্বাচনে প্রযোজকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন প্রযোজক-অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী এবং সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন প্রযোজক-নির্মাতা সাজ্জাদ হোসেন দোদুল।
প্রচারণার অংশ হিসেবে বুধবার (১৬ মার্চ) ঢাকা ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয় প্রাচী-দোদুল সমমনা প্রার্থীদের পরিচিতি অনুষ্ঠান। এ সময় টেলিপ্যাবের সদস্যরা উপস্থিত হয়ে জানিয়েছেন তাদের সমস্যার কথা। সেসব সমস্যা সমাধানে প্রতিশ্রুতি দেন রোকেয়া প্রাচী-দোদুল। জানান, সর্বদা তারা প্রযোজকদের পাশে আছেন, আগামী দিনেও থাকবেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে অসুস্থ শরীরে এসে মনের ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রযোজক-নির্মাতা সরদার রোকন। কথার এক ফাঁকে আবেগাপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন এলে অনেকেই অনেক আশার বাণী শোনান। কিন্তু বিগত দিনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, নির্বাচন শেষ হয়ে গেলে সেসব আশার বাণীও শেষ হয়ে যায়। সম্প্রতি আমি হার্ট অ্যাটাক করেছি। কিন্তু রোকেয়া প্রাচী আপা ও দোদুল ভাই ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেওয়া কেউই আমার খোঁজ নেয়নি। অথচ তারা দুজন আমাকে সন্তানের মতো খোঁজ নিয়েছেন। আমার জন্য তারা হাসপাতালের বারান্দায় নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। আমার চিকিৎসার খরচ নিয়ে পরিবারকে চিন্তা করতে হয়নি, তারাই বহন করেছেন। তারা আমার মা-বাবা। ইন্ডাস্ট্রির কথা ভেবে এমন যোগ্য লোকদেরই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করা উচিত। ’
নাটকের সিন্ডিকেট ভেঙে দেবেন জানিয়ে রোকেয়া প্রাচী বলেন, ‘প্রযোজক বাঁচলে ইন্ডাস্ট্রি বাঁচবে। প্রযোজকদের স্বার্থ রক্ষায় নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। টেলিপ্যাবকে ঢেলে সাজাতে চাই। প্রযোজকদের সুন্দরভাবে কাজ করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাই। টেলিপ্যাব এই দীর্ঘ সময়ে যতটা এগিয়ে যাওয়ার কথা, গতিশীল হওয়ার কথা, সেই জায়গায় কিছুটা ঘাটতি রয়ে গেছে। সেসব ঘাটতি পূরণ করব। আমরা প্রযোজকদের মুনাফা নিশ্চিত করতে চাই। ’
সাজ্জাদ হোসেন দোদুল বলেন, ‘বিদেশি ডাবিংকৃত সিরিয়ালের জন্য আমাদের প্রযোজকরা কাজহীন হয়ে যাচ্ছে। এই দিকটায় নজর দিয়ে প্রযোজকদের কাজের ব্যবস্থা করে দিতে চাই। মিডিয়াতে আমার জন্ম। আত্মীয়-স্বজনের সাথে সেভাবে যোগাযোগ হয় না। কিন্তু মিডিয়ার সবার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হয়। তারাই আমার সব। বিদেশি ডাবিংকৃত সিরিয়াল বন্ধের জন্য যখন আন্দোলন হয় তখন একটি মহল আপস করেছিলেন। তারা যদি আপস না করতেন তাহলে আজ প্রযোজকদের বেকার থাকতে হতো না। এই সিরিয়ালের জন্য অনেক প্রযোজক কাজহীন। পিক আওয়ারে বিদেশি সিরিয়াল প্রচারের কারণে দেশীয় সংস্কৃতি হুমকির মুখে পড়েছে। আমরা এটি থেকে মুক্তি পেতে চাই। ’
এর আগে নির্বাচন সামনে রেখে কর্মক্ষেত্র, নিরাপত্তা, বিনিয়োগ, মর্যাদা ও প্রাপ্তি নিয়ে পাঁচটি ভাগে ভাগ করে একগুচ্ছ নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন তারা। ইশতেহারে টেলিপ্যাবের উন্নয়নে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন রোকেয়া প্রাচী ও দোদুল।
এই নির্বাচনে কোনো প্যানেল না থাকলেও সমমনা প্রার্থীদের একাংশ জোট হয়ে নির্বাচন করছে। রোকেয়া প্রাচী ও সাজ্জাদ হোসেন দোদুলের নেতৃত্বে মোট ২৭ জন প্রার্থী এক হয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এবারের নির্বাচনে ২৭টি পদে ৫৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সদস্য পদে নির্বাচন করছেন।