“ছোটবেলা থেকেই সাত সুরের সঙ্গে ওঠাবসা। গান লিখে তাতে সুর বাসানো, এরপর নিজের মতো করে গাওয়া– এভাবেই চলে আসছিলদিনের পর দিন। নাম যশখ্যাতি নিয়ে সত্যিই ভাবিনি। তাই কোনো গান প্রকাশ করে যখন কারও প্রশংসা পেয়েছি, তখন অন্যরকম ভালো লাগায় মন ভরে গেছে। একই সঙ্গে অনুপ্রাণিত হয়েছি আরও নতুন কিছু করে দেখানোর জন্য। সেই চেষ্টা অব্যাহত রাখার সুবাদেই হয়তো সুযোগ হয়েছে সিনেমায় প্লেব্যাক করার।
একইভাবে নিরীক্ষাধর্মী আয়োজনেও সাহসী হতে পেরেছি শুধুসংগীতপ্রেমীদের কারণেই। কিন্তু এই প্রথম কোনো গান তৈরি করতে গিয়ে অনুভব করলাম, প্রত্যাশার চাপ কেমন হতে পারে। আর সেই অভিজ্ঞতা হয়েছে ‘আড়ালে হারালে’ গানটি তৈরি করতে গিয়ে। প্রকাশের পর যখন দেখলাম গানটি অনেকেই শুনছেন, জানাচ্ছেন ভালো লাগার কথা– তখন থেকেই প্রত্যাশার চাপ কমতে শুরু করেছে।”
সদ্য প্রকাশিত ‘আড়ালে হারালে’ গানটি নিয়ে এ কথাই শোনালেন কণ্ঠশিল্পী জেফার রহমান।
তবে কথা হলো, যিনি কখনও জনপ্রিয়তার দৌড়ে অংশ নেননি, তিনি কেন প্রত্যাশাপূরণের চাপ অনুভব করছেন?
এ প্রশ্নের জবাবে জেফার বলেন, ‘খ্যাতির মোহে নয়, শ্রোতার হৃদয় স্পর্শ করার জন্যই শিল্পীজীবন বেছে নেওয়া। তাই আমার কাছে যখন কোনো শ্রোতা কিছু আশা করেন, তখন শিল্পী হিসেবে তা পূরণ করাও এক ধরনের দায়বদ্ধতা। সে কারণে‘আড়ালে হারালে’ গানটি তৈরির প্রতিটি মুহূর্তে শ্রোতা-অনুরাগীদের পছন্দ নিয়েই ভাবতে হয়েছে। এ কথা সত্য, ‘ঝুমকা’ গানটি দেশ-বিদেশের নানা বয়সী, নানা শ্রেণির মানুষের মধ্যে এতটা আলোড়ন না তুললে হয়তোএতটা প্রত্যাশার চাপ থাকত না। মানছি, সব গানই শ্রোতার মধ্যে একই রকম অনুভূতি এনে দেয়না, প্রতিটি আয়োজনের প্রতিক্রিয়াও একই রকম নয়। এরপরও চেষ্টা থাকে সৃষ্টির মধ্য দিয়ে একেকটি সময়কে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে রাখার। আমিও সেই কাজই করে যাচ্ছিকণ্ঠশিল্পী, গীতিকার ও সুরকার হিসেবে। বিনিময়ে সংগীতপ্রেমীরা যে ভালোবাসা বিলিয়ে দিচ্ছে, সেটাই কুড়িয়ে নিচ্ছি চলার পথের পাথেয় হিসেবে। এভাবেই সংগীতে নিজস্বতা ধরে রেখেই যেতে চাইছি বৃত্তের বাইরে।