English

26 C
Dhaka
মঙ্গলবার, নভেম্বর ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

ছাগলকাণ্ডে ১৬ টাকার ছাগলের গল্প শোনালেন অভিনেতা ফারুক

- Advertisements -
ছাগলকাণ্ডে উত্তাল দেশ। কোরবানি ঈদের আগ থেকে এখন পর্যন্ত আলোচনার শীর্ষে এই ছাগল কাণ্ড। ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কেনা নিয়ে শুরু হওয়া ঘটনা প্রতিনিয়ত চমকপ্রদ তথ্য সামনে আসছে। এবার ছাগলকাণ্ডের মাঝেই ছাগল নিয়ে নিজের জীবনের এক গল্প প্রকাশ করলেন গুণী অভিনেতা ফারুক আহমেদ।
জানালেন, শৈশবে তিনিও কিনেছিলেন ১৬ টাকা দিয়ে এক ছাগল। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে আবেগঘন স্মৃতি। 

সম্প্রতি দেশের এক সংবাদমাধ্যমকে শৈশবের স্মৃতিচারণ করে অভিনেতা জানান, একবার মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফিরছেন তিনি। এমন সময় এই অভিনেতার হঠাৎ চোখ যায় একটি কালো ছাগলের দিকে।

ছাগলের ছোট্ট বাচ্চা। ছাগলটি খুবই পছন্দ হয় ফারুকের। কেউ একজন ছাগলটিকে বিক্রি করতে যাচ্ছিলেন। এ কথা শুনে ফারুক বায়না ধরলেন যে ছাগলটি কিনবেন।
তাঁর মা-বাবা কেউই রাজি নন। কারণ, এটিকে তাঁদের সঙ্গে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া, লালন–পালন করা কঠিন। তবু নাছোড়বান্দা ফারুক আহমেদ; ছাগলটি তাঁর চাই-ই।ফারুক আহমেদ বলেন, “তখন আমি আমার ফুফুকে অনুরোধ করি ছাগলটি দেখে রাখতে। তিনি রাজি হন।

ছাগলটির দাম চেয়েছিল ২০ টাকা। পরে দর-কষাকষি করে ১৬ টাকায় ঠিক হয়। কিন্তু টাকা পাব কোথায়? মাকে বললাম। মা বললেন, ‘এত টাকা আমি পাব কোথায়? তোর বাবাকে বল।’ আমি আব্বার কাছে গিয়ে ১৬ টাকা চাইলাম। আব্বা বললেন, ‘বাবা আমি স্কুলশিক্ষক। ১৬ টাকা দিয়ে ছাগল কেনার সামর্থ্য আমার নাই।’ আব্বাকে বললাম, আব্বা আমার কাছে ৫ টাকা আছে, আপনি ১১ টাকা আমাকে দেন। আব্বা সন্তানের মনরক্ষার জন্য আমাকে পকেট থেকে ১১ টাকা বের করে দিলেন। কেনা হলো ছাগল।”

অবশ্য কেনার তিন মাস পরেই মারা যায় সেই ছাগলটি। সেই স্মৃতি স্মরণ করে অভিনেতা বলেন, “ঢাকা থেকে গ্রামে গিয়ে মনটা খারাপ হয়ে যায়। ফুফু জানান, আমার ছাগলটা নাকি তিন মাস পরই মারা গেছে। শুনে সঙ্গে সঙ্গে আমার কান্না চলে আসে। আমি কাঁদছি। আব্বা আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছেন, ‘কেঁদো না থাক বাবা, তোমাকে এবার আরও সুন্দর একটা ছাগল কিনে দিব।’ আমি আব্বার চোখের দিকে তাকালাম। দেখলাম, তাঁর চোখ ভেজা। বাবাও কাঁদছেন। দুচোখ থেকে গড়িয়ে পানি ঝরছে।”

বাবার সেই কান্নার অর্থ তখনো বোঝার বয়স হয়নি ফারুক আহমেদের। শুধুই এটাই বুঝেছিলেন যে আর কখনোই হয়তো ছাগল কেনার সামর্থ্য হবে না তাঁর। ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আব্বা আমাকে খুশি করার জন্য মাত্র ১৬ টাকা দিয়ে আরেকটি ছাগলের বাচ্চা কিনে দিতে পারেননি। আমার তাতে কোনো দুঃখ নেই। বরং আমার গর্বে বুক ভরে যায়, আমার আব্বা সৎ জীবনযাপন করেছেন বলে। অন্যের অর্থ আত্মসাৎ করে সন্তানকে ছাগল কেনার ১৬ টাকা দেননি। আমাদের বাস্তবতা শিখিয়েছেন।’

উল্লেখ্য, কোরবানির ঈদের আগে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনে আলোচনায় আসেন এনবিআর কর্মকর্তা মতিউরের দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত। সেই ছাগলের সূত্র ধরেই আলোচনায় আসেন সরকারি কর্মকর্তা মতিউর। বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার অঢেল সম্পদের তথ্য প্রকাশিত হয়। সরকারি চাকরি করে মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যরা কীভাবে বিপুল বিত্ত বৈভবের হলেন তা নিয়ে প্রশ্নের অন্ত নেই। একাধিক বাড়ি, কয়েকটি বিলাসবহুল গাড়ি ও ফ্ল্যাট, রিসোর্ট, জমি, শিল্প কারখানার মালিকানাসহ শেয়ারবাজারেও বিরাট অঙ্কের বিনিয়োগ রয়েছে তাদের।

এরই মধ্যে মতিউর রহমানকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এনবিআরের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে। তাকে সংযুক্ত করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ে। সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ থেকেও সরানো হয়েছে প্রভাবশালী ও আলোচিত এই সরকারি কর্মকর্তাকে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন