আজাদ আবুল কাশেম: পঞ্চাশ-ষাটেরদশকে আমাদের দেশের যেসব বাঙ্গালী মুসলমান মহিলারা অতি সাহসিকতার সাথে, মঞ্চে ও রেডিওতে নাটক করতেন, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সেতারা আহমেদ। পরবর্তিতে চলচ্চিত্রে ও টেলিভিশনে একজন গুণী অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিতি পান। আজ তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী । তিনি ২০০১ সালের ৩০ মার্চ, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। মৃত্যুদিবসে, প্রয়াত গুণি অভিনেত্রী সেতারা আহমেদ-এর স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
অভিনেত্রী সেতারা আহমেদ ১৯৩১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর, ঢাকায় জন্মগ্রহন করেন। মঞ্চনাটক দিয়ে অভিনয় শুরু করেন তিনি। ঢাকা রেডিওতে নাট্যশিল্পী হিসেবে যোগ দেন চল্লিশদশকের শেষের দিকে।
সেতারা আহমেদ একজন শহীদজননী। তাঁর ছেলে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মানিক আহমেদ, যিনি আামাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন।
সেতারা আহমেদ অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রসমূহের মধ্যে রয়েছে- আসিয়া, ধূপছাঁও, পালাবদল, সখিনা, আলিঙ্গন, নীল আকাশের নীচে, রং বদলায়, অশান্ত ঢেউ, সারেং বউ, অনির্বাণ, সুন্দরী, আরাধনা, অশিক্ষিত, সূর্য দীঘল বাড়ী, তরুলতা, আপন ভাই, বিনি সুতার মালা, ভালো মানুষ, কলমিলতা, লালকাজল, ভালো মানুষ, উজান ভাটি, ভাগ্যচক্র, সাত রাজার ধন, চন্দ্রনাথ, স্বামীর ঘর, সীমার, বড় মা, মেহমান, নতুন পৃথিবী, গৃহবিবাদ, সুদ আসল, আওলাদ, চাঁপা ডাংগার বউ, রক্তের অধিকার, দেবর ভাবী, চোরের বউ, প্রভৃতি।
তিনি টেলিভিশন নাটকেরও জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের ধারাবাহিক নাটক ‘সকাল সন্ধ্যা’য় পঁচার মা চরিত্রে অভিনয় করে দর্শক-শ্রোতাদের কাছে আজও স্মরণীয় হয়ে আছেন তিনি।
সেতারা আহমেদ বেশীরভাগ ছবিতে জটিল ও কুটিল চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ছোট বেলায় আমরা তাঁর অভিনয় দেখে বলতাম ‘কূটনীবুড়ি’। এসব চরিত্রে তাঁকে মানিয়ে যেত বেশ। তিনিও দক্ষতার সাথে অভিনয় করে, ‘কূটনীবুড়ি’ হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তাঁর অভিনয় প্রতিভা দিয়ে জানিয়ে দেন, এরকমসব চরিত্রে তিনি অদ্বিতীয়। নিখুঁত অভিনয় গুণে সেতারা আহমেদ, চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন সবার মনে।