আমাদের দেশেই অনেক ভালো নির্মাতা, কলা-কুশলী ও শিল্পী আছেন, শুধুই তাদের প্রতিদিনকার রুটি-রুজির চিন্তাটা মাথায় নিয়ে নিন, দেখবেন এই দেশ থেকেই সেরাটা পাবেন। কথাগুলো বলছিলেন, অভিনয় শিল্পী শফিউল আলম বাবু।
এ মাসেই তার অভিনীত সিনেমা ‘অন্তর্জাল’ মুক্তি পেয়েছে এবং ‘দুঃসাহসী খোকা’ মুক্তি পেতে যাচ্ছে। সেপ্টেম্বর মাসে বাবু অভিনীত দুটি ছবিতে তাকে দেখা যাবে ভিন্ন ভিন্ন দুটি লুকে। দীপঙ্কর দীপন এর পরিচালনায় অন্তর্জাল সিনেমায় অন্তর্জালের সিইও তে মুখ ভর্তি গোঁফ দাঁড়ির একজন রাসভারী বিজ্ঞানীর ভূমিকায়। আর মুশফিকুর রহমান গুলজার নির্মিত দুঃসাহসী খোকা সিনেমায় গোঁফ দাঁড়ি বিহীন একজন অতি উচ্চাভিলাসী নেতার ভূমিকায়।
বরাবরই বাবুকে সব সময় গোপ সহ দেখে দর্শকরা অভ্যস্ত। তাকেই এবার গোপবিহীনভাবে কেমন দেখা যাবে তা নিয়ে অনেকের মাঝেই প্রশ্ন বা উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
অন্তর্জাল সিনেমাটি ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ, আমেরিকা কানাডাসহ বিশ্বের ১৮৪ টি সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে। মুক্তির প্রথম দিনেই বেশ সাড়া ফেলেছে। গল্প, নির্মাণ, লোকেশন, চরিত্র বাছাই এবং সর্বোপরি প্রত্যেকের অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েছে দর্শক। এই ছবিতে অন্তর্জাল এর সিইও এর চরিত্রে বাবু’র অনবদ্য অভিনয় ও লুক প্রশংসা কুড়িয়েছে দর্শক ও শুভানুধ্যায়ীদের।
অন্যদিকে ২৯ সেপ্টেম্বর মুক্তি মুক্তি পেতে যাচ্ছে মুশফিকুর রহমান গুলজার নির্মিত সিনেমা ‘দু:সাহসী খোকা’। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শৈশব কৈশরকালের উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলী নিয়ে সরকারি অনুদানে নির্মিত ‘দু:সাহসী খোকা’ চলচ্চিত্রটিতে বাবু একেবারে স্বভাবসুলভ গেট আপ এর বাইরে একেবারে ভিন্ন লুকে দর্শকদের সামনে হাজির হচ্ছেন। বাবু জানান, এই কাজটি করবার জন্যে তাকে বেশ কিছু কাজ ছাড়তে হয়েছে। কারন তখন তিনি ৩টি মেগা সিরিয়ালে অভিনয় করছিলেন। বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনও বাদ দিতে হয়েছে তাকে। তাই দর্শকরা যেমন অপেক্ষায় আছেন, তেমনি বাবু নিজেও অপেক্ষায় আছেন আসলে কতটা সাবলীল হয়েছে তার কাজটুকু এবং সিনেমাটি।
সব মিলিয়ে বাবু বলেন, একজন অভিনেতা হচ্ছে কাঁদামাটির মত। একজন পরিচালক তাকে ভেঙ্গেচুরে মূর্তপ্রতিক করে তুলবেন তার গল্পের চরিত্রের মত করে। এর জন্যে অভিনেতাকে যেমন সময়, শ্রম ও মেধার সমন্বয় ঘটান। তেমনি নির্মাতাদের মাথায় রাখা উচিত তার গল্পের প্রত্যেকটি চরিত্র ও অনুসঙ্গের মিলনেই একটি পূর্ণাঙ্গ গল্প হয়ে ওঠে। তাই প্রতিটি সেক্টরের প্রতিটি অনুসঙ্গের দিকেই নির্মাতার পূর্ণাঙ্গ খেয়াল রাখা উচিৎ।
শুধুমাত্র কতিপয় ২/৪ জনের দিকেই খেয়াল রেখেই নির্মাতা সবদিকে নজর রেখেছেন ভাবনাটা অমূলক। একটি পূর্ণাঙ্গ চরিত্র হয়ে ঊঠবার জন্য ২ সিনের একজন অভিনেতাও কি কি ত্যাগ করে (বিশেষ করে আর্থিক দিক) বা করেছে তাঁর দিকে নির্মাতার খেয়াল রাখা উচিৎ আর এই উচিৎ কথাগুলো বললেই অধিকাংশ নির্মাতারাই সেই শিল্পী বা কলা-কুশলীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে নো-এন্ট্রির খাতায় লিষ্টেড করেন, তাই অধিকাংশই বছরের পর বছর মুখ বুজেই সব সহ্য করে যাচ্ছেন।
বিনয়ের সাথে বলছি- দেশের বাইরে থেকে ধার করতে হবেনা, আমাদের দেশেই আছেন অনেক ভালো নির্মাতা, কলা-কুশলী। শুধু তাঁদের নিত্যদিনকার রুটি-রুজির চিন্তাটা মাথায় নিয়ে নিন, দেখবেন এই দেশ থেকেই সেরাটা পাবেন। কারন নিজে না হোক পরিবারকে অভূক্ত রেখে কেউ কখনো কোন সৃষ্টি কর্মে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারেনা।