আজাদ আবুল কাশেম: খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচালক মুস্তাফিজ-এর ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৯২ সালের ৪ আগষ্ট, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। প্রয়াত এই গুণী চিত্রপরিচালক-এর স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
মুস্তাফিজ (মুস্তাফিজুর রহমান) ১৯২৮ সালের ১২ মার্চ, ঢাকার বংশালে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মোহাম্মদ ইউসুফ ছিলেন ইসলামিয়া কলেজের অধ্যাপক এবং মা মোছাম্মত কানিজ ফাতেমা গৃহিণী। তাঁর বড় ভাই প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক এহতেশাম। তাঁর মামা, ই আর খান (মামা)ও ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক, খ্যাতিমান চলচ্চিত্রগ্রাহক প্রয়াত মাহফুজুর রহমান খান তাঁর মামাতো ভাই। তাঁর ছেলে ইশতিয়াকও চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন।
বড় ভাই এহতেশাম-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলচ্চিত্র ব্যবসায় আগমন ঘটে মুস্তাফিজ-এর।
এরপর এহতেশাম পরিচালিত ‘এদেশ তোমার আমার’ ছবির সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন, পরবর্তিতে হন পূর্ণাঙ্গ পরিচালক। মুস্তাফিজ পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘হারানো দিন’ মুক্তিপায় ১৯৬১ সালে। ঢালিউডের প্রথম সিলভার জুবিলি হিট চলচ্চিত্র ‘হারানো দিন’ ।
তাঁর পরিচালিত অন্যান্য চলচ্চিত্রসমূহ- তালাশ, প্যায়সে, মালা, ডাক বাবু, ছোটে সাহাব, কুলি, আনাড়ি, পায়েল, বাবলু, মুন্না অউর বিজলী, একই অঙ্গে এতো রূপ, আলোছায়া, মায়ার বাঁধন, ছোট সাহেব, নূপুর, বিজলী ও সোনিয়া।
মুস্তাফিজ প্রযোজনা করেছেন- রূপ কুমারী, পীচ ঢালা পথ ও বিজলী এই ছবিগুলো।
চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, কাহিনী ও চিত্রনাট্যকার । এদেশের প্রথম সিলভার জুবিলি হিট চলচ্চিত্রের নির্মাতা মুস্তাফিজ। এই নির্মাতার বেশির ভাগ ছবিই ব্যাপকভাবে ব্যবসাসফল। একসময় এই পরিচালক এর নাম শুনেই দর্শকেরা ছবি দেখার জন্য সিনেমা হলে ভীড় জমাতেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে একটি শক্তিশালী ইন্ডাস্ট্রি রূপে দাড় করানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন এহতেশাম-মুস্তাফিজ ভ্রাতৃদ্বয়। তাঁরা চেয়েছিলেন শিল্প ও বাণিজ্য দুটোতেই যেন এদেশের চলচ্চিত্র এগিয়ে যায় ।
মুস্তাফিজ বাংলাদেশের বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের একজন কুশলী নির্মাতা। তাঁর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে রাস্ট্রীয় বা প্রাতিষ্ঠানিক কোনো পুরস্কার তিনি পাননি। আজকের তরুন প্রজন্মের অনকেই হয়তো এই কীর্তিমান মানুষটিকে চেনেন না, জানেন না। তাই বলে চলচ্চিত্র ইতিহাস থেকে তাঁর নাম মুছে যাবার নয়। মুস্তাফিজ বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের এক অবিস্মরণীয় নাম।