English

25 C
Dhaka
রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
- Advertisement -

খ্যাতিমান অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক-প্রযোজক আজমল হুদা মিঠুর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- Advertisements -

খ্যাতিমান অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক-প্রযোজক- পরিবেশক, সঙ্গীত পরিচালক-গীতিকার-কন্ঠশিল্পী, স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্রর শব্দসৈনিক-মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আজমল হুদা মিঠু’র ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১০ সালের ৩ জানুয়ারি, ৬৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুদিবস-এর এই দিনে প্রয়াত আজমল হুদা মিঠু’র স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা এবং তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত প্রার্থনা করি।

আজমল হুদা মিঠু’র জন্ম ১৩ এপ্রিল ১৯৪৩ সালে, বগুড়ায়। তাঁর বাবা মৌলভী কাজেবউদ্দিন আহমেদ ছিলেন, আইনজীবী। মা সালমা আক্তার খাতুন। তাঁরা ২ বোন ৫ ভাই। ভাইয়েরা হলেন- শামসুল হুদা (ডাক্তার), নরুল হুদা (প্রকৌশলী), সাইফুল ইসলাম (মেরিন প্রকৌশলী ও বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী), কামরুল হুদা (প্রযোজক-পরিবেশক)। বোন- রাবেয়া খাতুন (ডাক্তার), রোকেয়া খাতুন (ভাইস প্রিন্সিপ্যাল সেন্ট্রাল ওমেন কলেজ)।

আজমল হুদা মিঠু লেখাপড়া করেছেন বগুড়া মিশনারি স্কুল, বগুড়া জিলা স্কুল ও বগুড়া আজিজুল হক কলেজে।

আজমল হুদা মিঠু ১৯৬৮ সালে প্রথম অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রে জড়িত হন তিনি। প্রথম অভিনীত চলচ্চিত্র, আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘বাল্যবন্ধু’। এছাড়াও- আনাড়ি, পায়েল, বাবলু, কসম উসক্ ওয়াক্ত কি (নায়ক), স্মৃতিটুকু থাক, ঢেউয়ের পর ঢেউ, রং বদলায়, পীচ ঢালা পথ, ধীরে বহে মেঘনা (নায়ক), সংগ্রাম, রাতের পর দিন, বিজলী, চ্যালেঞ্জ, দোস্তী, আক্রোশ, আমিই ওস্তাদ, এরই নাম দোস্তী’সহ অসংখ্য ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন। তিনি টেলিভিশনের নাটকেও অভিনয় করেছেন।

অভিনয়ের পাশাপশি আজমল হুদা মিঠু চলচ্চিত্র পরিচালক-প্রযোজক-পরিবেশক-সঙ্গীত পরিচালক-কাহিনী-চিত্রনাট্যকার-গীতিকার-কন্ঠশিল্পী হিসেবেও সমধিক পরিচিতি পান। টিভি-বেতারের নাট্যপ্রযোজক ও সুরকারও ছিলেন আজমল হুদা মিঠু। তাঁর কাহিনী-চিত্রনাট্য ও পরিচালনায়- দোস্তী, আমিই ওস্তাদ (সঙ্গীত পরিচালনাও), চোর ডাকাত পুলিশ, অপরাধ জগতের রাজা, ঝন্টু মন্টু দুই ভাই, নির্মিত হয়।

তাঁর প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্রসমূহের মধ্যে- ধীরে বহে মেঘনা, বাদশা, দোস্তী, কালো গোলাপ, অগ্নিপরিক্ষা, নিয়তীর খেলা, মিলন তারা, আমিই ওস্তাদ, চোর ডাকাত পুলিশ, সংসার সীমান্তে, দুখিনীবধূ শয়তান যাদুকর, অপরাধ জগতের রাজা, এরই নাম দোস্তী, ঝন্টু মন্টু দুই ভাই, অন্যতম। তাঁর প্রযোজনা সংস্থার নাম ‘সালমা কথা চিত্র’ ও ‘জয় বিজয় চলচ্চিত্র’।

আজমল হুদা মিঠু সুরারোপিত কয়েকটি গান- তোমাদের পাশে এসে, বিপদের সাথী হতে আজকের চেষ্টা আমার…, এ কি ভুল আমি করলাম…, তুমি সন্ধ্যা আকাশের তারার মতো আামার মনে জ্বলবে…, আমি যদি মেঘ হতাম…, যদি জানতে চাও…, ভালোবেসে সবারই তো ঘর বাঁধা হয় না…, প্রভৃতি।

আজমল হুদা মিঠু বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের রাজ্যে, একসময় ছিলেন অলিখিত রাজা। চলচ্চিত্রশিল্পে তাঁর প্রতাপ-প্রতিপত্তি ছিল সুপ্রতিষ্ঠিত। অনেক ব্যবসাসফল ভালো চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন। তিনি অনেক নতুন নতুন শিল্পী, কলা-কুশলী ও পরিচালকদের কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন। একজন শক্তিমান অভিনেতা হিসেবেও ছিলেন সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ।

ব্যক্তিজীবনে আজমল হুদা মিঠু ১৯৬৫ সালে, সালমা হুদা’র সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের ৫ সন্তান- ফারিহা হুদা, সামিহা হুদা, আসিফ হুদা (বিজয়), আশরাফ হুদা (জয়) ও ফারহানা হুদা। তাঁর দুই ছেলে, আসিফ হুদা (বিজয়) খলনায়ক ও আশরাফ হুদা (জয়) নায়ক হিসেবে চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি স্বাধীনতাকামী শিল্পী-কলাকুশলীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন একটি শক্তিশালী সংগঠন। দেশের বাইরে বা মুক্তাঞ্চলে যাওয়ার জন্য, মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষদের সহযোগিতা করতো এই সংগঠন।

স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রের ‘জল্লাদের দরবার’ নাটকের সংগঠক ও অভিনেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজমল হুদা মিঠু, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ঐতিহাসিক নাটক ‘জল্লাদের দরবার’-এ অভিনয় করে, খ্যাতিমান অভিনেতা হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন ।

আজমল হুদা মিঠু শারীরিকভাবে চলে গেছেন, কিন্তু রেখে গেছেন তাঁর সৃষ্টিশীল কর্ম। রেখে গেছেন শিল্প-সংস্কৃতির জগতে তাঁর বলিষ্ঠ উজ্জ্বল ভূমিকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ও বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পে তাঁর অবদান, চিরদিনই স্মরণযোগ্য।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন