নাসিম রুমি: উৎসব মুখর পরিবেশে ১৯ এপ্রিল বিএফডিসিতে শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হয় ভোট চলে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। কিন্তু নির্বাচনের ২৬ দিন পর এসে বুধবার (১৫ মে) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন নিপুণ। রিটে মিশা সওদাগর ও মনোয়ার হোসেন ডিপজলের নেতৃত্বাধীন কমিটির দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নতুন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন নিপুণ।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন তিনি। তবে দেশ ছাড়ার আগেই রিট করার সমস্ত বিষয় ঠিক করে গিয়েছিলেন।
সেখান থেকেই এই নায়িকা বললেন, ‘রিট আরও আগেই করা উচিত ছিল। ভোট হয়েছে শুক্রবার। ভোটের ফলাফল এসেছে শনিবার সকালে। রোববারই রিটটি করা দরকার ছিল। কিন্তু আমি অসুস্থ হয়ে পড়া এবং জরুরি কাজে যুক্তরাজ্য হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। আমি আসার সময় সবকিছু প্রসেস করে রেখে এসেছিলাম। গত মঙ্গলবার আমার আইনজীবীর মাধ্যমে রিটটি করেছি।’
শুধু ভোটের দিনই নয়, ভোটের আগের দিন থেকেই মিশা-ডিপজল প্যানেলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন আপিল বোর্ডের যোগসূত্রে এই অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন নিপুণ। তিনি বলেন, ‘‘ভোট শেষ হওয়ার পর তখন সন্ধ্যা ৭টা। তখন থেকেই নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান ও আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যানের কথাবার্তা আমার কাছে রহস্যজনক মনে হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান খসরু ভাই বারবার আমাকে বলছিলেন, ‘এখানে বসে থেকে আর লাভ নাই। বাসায় চলে যান। মিশা-ডিপজল পুরো প্যানেল জয়লাভ করবে।’ আমি বারবার বলেছি, ‘হারজিত যা হোক, ফলাফল না নিয়ে এখান থেকে যাব না।’ তখনও পোর্টফোলিও ভোটের বাক্সই খোলেনি, কীভাবে চেয়ারম্যান এসব বলতে পারেন?’’
ভোট শেষে যখন ফলাফলের অপেক্ষায় সেসময়ের কথা উল্লেখ করে নিপুণ বলেন, ‘যতই রাত বাড়ছিল, ততই ভোটকেন্দ্র ও বাইরের পরিবেশ আমার কাছে হুমকিস্বরূপ মনে হচ্ছিল। সেদিনের এমন পরিবেশ আমি আগে কখনও দেখিনি এফডিসিতে। পুরো আঙিনা তারা দখলে নিয়েছিল। ভোটের গণনা শেষ হতে তখনও অনেক সময় বাকি ছিল, কিন্তু তাদের হাবভাবে মনে হচ্ছিল, তখনই তারা পুরো প্যানেল জিতে গেছে। আমি নিজেও নিরাপদ মনে করিনি ভোট গণনার পুরো রাত। তাই আমিসহ আমার প্যানেলের কয়েকজন এক নম্বর স্টুডিওর মেকাআপ রুমে তালা মেরে ভেতরে বসে ছিলাম ভোটের ফলাফল পর্যন্ত।’ ‘যেহেতু আমি ভোটের ফলাফল পর্যন্ত ছিলাম। মিশা-ডিপজল প্যানেলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন, আপিল বোর্ডের যোগসাজশে ভেতরে-ভেতরে এত বড় অনিয়ম চলে আসছিল, সেটি ফলাফল প্রকাশের অনেক সময় পর স্পষ্ট হয়েছে।’
নিপুণ আরও বলেন, ‘আদালত তো আমাদের আস্থার জায়গা। যেসব ডকুমেন্টের ভিত্তিতে রিট করা হয়েছে, আমি বিশ্বাস করি, নবনির্বাচিত কমিটি স্থগিত হবে। আমাদের পক্ষে রায় আসবে।’