বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘কারার ঐ লৌহকপাট’গান বিতর্কে মুখ খুললেন প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী কবীর সুমন। এ নিয়ে দুই বাংলার মানুষই প্রতিবাদে ফেটে পড়েছেন। এ রিমেক গানের প্রতিবাদ করলেন ওপার বাংলার জনপ্রিয় এ শিল্পী। পাশাপাশি কবীর সুমন ‘কারার ঐ লৌহকপাট’ গানের ইতিহাসও বলেছেন।
সংগীতশিল্পী কবীর সুমন আজ (১৭ নভেম্বর) সকালে ফেসবুক লাইভে আসেন শিল্পী। ফেসবুক লাইভে ‘লৌহ কপাট’ বিতর্কে তার অবস্থান স্পষ্ট করেন। লাইভের শুরুর দিকে ‘রোজা’ সিনেমার ‘দিল হ্যায় ছোটা সা’ গাইতে শুরু করেন সুমন।
কবীর সুমন এরপর বাংলাদেশের এক শিল্পীর গাওয়া ‘যদি সুন্দর…’ গানটি গান। সঙ্গে হিন্দি সিনেমা ‘আয়ি মিলন কি বেলার’, ‘তুম তুম কমসিন হো’ গানটিও শোনান ভক্তদের। এ আর রহমানের তৈরি ‘দিল হ্য়ায় ছোটাসা’র সঙ্গে এই দুই গানের অদ্ভুত মিল খুঁজে পান সুমন। তিনি জানান, ‘রোজা’র এ গান শুনে তার ভালোলাগার কথা। এ আর রহমানের প্রতি তার অনুরাগের কথা। কিন্তু এই এ আর রহমানই ‘কারার ঐ লৌহকপাট’র এমন সুর দিলেন! কবীর সুমন হতবাক হয়েছেন এ গান শুনে।
‘কারার ঐ লৌহকপাট’গানের রিমেক প্রসঙ্গে ফেসবুক লাইভে সুমন বলেন, ‘যারা গানের লিরিক দিলেন, তারা টাকা পেলেন। খুব ভালো কথা। টাকা সবার দরকার। এখানে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু কেউ কি একবারও রহমানকে বলে দেননি, কোন গানের রিমেক তিনি করেছেন! এই গানের ইতিহাস রহমান জানেন?
কবীর সুমন আরও বলেন, ‘গানের অর্থটা জানার চেষ্টা করেছেন রহমান? ধরে নিন, এটা কাজী নজরুল ইসলামের লেখা নয়। তবুও কি গানের কথাগুলোর মানে বোঝা উচিত ছিল না? লিরিক শুনেই তো সুরটা দিতে হবে। তবে আজকাল এমনই গান হচ্ছে। যা শুনলে মনে হয়, মিক্সারের ভিতর সিমেন্ট, পাথর সব একসঙ্গে ঘুরছে।’
তিনি আরও বলেন, “এ গানের রিমেকও তাই! তবে ইনিই তো ‘দিল হ্যায় ছোটা সা’ তৈরি করেছিলেন, সেই মানুষটা ‘কারার ঐ লৌহকপাট’র এমন সুর দিলেন! বিশ্বাস হচ্ছে না রহমান সাহাব। কেউ কি ছিলেন না, যে লৌহ কপাটের ইতিহাস রহমানকে বলে দেবেন, যে এই গানটার সঙ্গে একটা জাতির সংগ্রাম জড়িয়ে রয়েছে।”
এখানেই শেষ নয়। এই ফেসবুক লাইভের মধ্য়ে দিয়ে বাংলাদেশের মানুষদের কাছে একটা আবেদন রাখলেন শিল্পী। তিনি বলেন, ‘যে দেশ নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি হিসেবে সম্মান দিয়েছে, দয়া করে তারা একটা সাংবাদিক বৈঠক করুন। রহমানের সঙ্গে দেখা করুন। তাকে এ গানের ইতিহাসটা বলুন। রহমানকে বলুন, ক্ষমা চাইতে হবে না। শুধু ইতিহাসটা জেনে নিন।’