ভারতের জনপ্রিয় কমেডিয়ান তারকা জনি লিভার। প্রায় পাঁচ দশকের অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। পর্দায় যার উপস্থিতিতে হাসির ঢেউ বয়ে যায় দর্শক মহলে। রুপালি পর্দায় লোক হাসালেও অভিনেতার ব্যক্তিগত জীবন ছিল রংহীন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন এই কমেডিয়ান।
জানা গেছে, জনি লিভারের বাবা ছিলেন মাতাল। তাই অনেক অর্থ-কষ্টে বেড়ে উঠেছেন তিনি। বলা যায়, সংগ্রামী এক জীবন পার করে বর্তমানের অবস্থান তৈরি করেছেন।
ভারতীয় এক গণমাধ্যমে নিজের সংগ্রামী জীবনের গল্প শুনিয়েছেন জনি লিভার। অভিনেতা বলেন, আমার বাবা একজন মাতাল ছিলেন। তিনি কখনও আমাদের খেয়াল রাখতেন না। আমার বড় চাচা আমাদের স্কুলের বেতন এবং রেশনের জন্য খরচ দিতেন। তাই কিছুদিন পর আমি বিরক্ত হয়ে স্কুল ছেড়ে দিই। কিন্তু স্কুলে পড়ার সময় সবার অনেক ভালোবাসা পেয়েছি।
এখনও স্কুলের শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে উল্লেখ করে জনি লিভার বলেন, আমার ক্লাস টিচার দময়ন্তী ম্যাডাম ভীষণ ভালো মনের একজন মানুষ ছিলেন। আমি এখনও তার সঙ্গে যোগাযোগ করি। আমি যখন স্কুল ছেড়ে চলে আসি তখন তিনি ছাত্রদের দিয়ে আমাকে ডেকে নিয়ে স্কুলের ফি, জামাকাপড় কিনে দিতে চেয়েছিলেন। যাতে আমি পুনরায় স্কুলে ফিরে যাই।
মিমক্রি করার কারণে স্কুলে বেশ জনপ্রিয়তা ছিল জিনি লিভারের। কিন্তু অভাবের কারণে স্কুল জীবন পার করতে পারেননি এই তারকা। অর্থের জন্য রাস্তায় কলম-প্যান্ট বিক্রি করতেন তিনি।
অভিনেতার ভাষ্য, ভিক্ষাবৃত্তি না করে বেঁচে থাকার জন্য মুম্বাইয়ের রাস্তায় এ কাজ করতেন জনি লিভার। পরবর্তীতে বাবার কারখানায় কাজ নেন জনি। মিমিক্রি করার কারণে সেখানেও ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
জানা গেছে, ১৯৮০ সালে গায়ক কল্যাণ-আনন্দর দপ্তরে ক্যারাম খেলছিলেন জনি লিভার। হঠাৎ সেখানে হাজির হন দক্ষিণী সিনেমার পরিচালক কে বিজয়ন। ওই সময়ে তিনি ‘ইয়ে রিস্তা না টুটে’ সিনেমার কৌতুকাভিনেতার চরিত্রে নতুন মুখ খুঁজছিলেন। গায়ক কল্যাণ জনির নাম সুপারিশ করলে তাকে কাস্ট করেন বিজয়ন। ১৯৮১ সালে মুক্তি পায় ‘ইয়ে রিস্তা না টুটে’। প্রথম সিনেমাতেই দর্শকদের নজরে আসেন। তার অভিনয়ের প্রশংসাও করেন সিনেমাপ্রেমীরা।
ওই সিনেমায় অভিনয়ের পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি জনি লিভারকে। এরপর সঞ্জয় দত্ত, গোবিন্দ, শাহরুখ খানের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করতে শুরু করেন। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে সাড়ে তিন শতাধিক সিনেমায় কৌতুকাভিনেতার চরিত্রে অভিনয় করেছেন এই তারকা।